কবিতাঃ- লাঠি
✍️ মনোজ ভৌমিক


সেদিন বিকেলে চিলেকোঠা ঘরের বন্ধ দরজাটা খুলতেই
পায়ের সামনে এসে আছড়ে পড়লো ধূলামলিন আরাম কেদারায় ঠেকানো
দাঠাকুরের বাঘের মুখওয়ালা শক্ত বেতের লাঠিখানি।
তুলতে গিয়ে দেখলাম বাঘের ধারালো দুটি দাঁত দ্বিখণ্ডিত!
কিছুক্ষণ মূঢ়ের মত নির্বাকচিত্তে তাকিয়ে নীরবে অশ্রুপাত করি ।
একদিন ঐ লাঠির ভীষণ আধিপত্য ছিল!
সূর্য ডোবার সাথে সাথেই দাঠাকুরের গম্ভীর কন্ঠস্বর,
"বড়বৌ, দাদাভাইকে বলো মাস্টার মশাই আসার সময় হলো। "
আওয়াজ শোনার আগেই ভাই বোন সহ সমবয়সী ছোটো কাকুও বৈঠকখানা ঘরে উপবিষ্ট।
বেশ কয়েকবার বদমাইসির জন্য ছোটোকাকুকেও লাঠির আঘাত নীরবে সহ্য করতে হয়েছে।
লাঠির খটাখট শব্দে বাড়ির দালান চৌকাঠ পর্যন্ত তটস্থ থাকতো।
আর আজ! আমার সন্তান তার দাঠাকুরের নড়বড়ে লাঠিটা লুকোনোর ধৃষ্টতা রাখে!
আড়ালে আবডালে দাঠাকুরের নীরব অশ্রু মোছাতে থাকে।
এখন আমি লাঠিটার দিকে নির্মিমেষ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি....
প্রশ্ন জাগে মনে, এখন কি ঐ লাঠির প্রয়োজন আছে?
নীরব যন্ত্রণায় বন্দী ঐ বাঘমুখো লাঠিদের দাঁত কি ভেঙে যায় সময়ের বিবর্তনে?