কবিতা:- নলিনখুড়োর গল্প
কবি:- মনোজ ভৌমিক


আজকে একটা গল্প হলেও সত্যি বলি শোনো,
নলিনখুড়োর একটা গল্প ভুলবো না কখনো।
তেপান্তরের মাঠ পেরিয়ে গ্রামটি ছিল বড়,
সেই গ্রামেতেই বাস করতেন মোদের নলিনখুড়ো।
ঠুরঠুরো সেই খুড়োর মুখে বিশাল গোঁফ-দাড়ি,
বলতেন তিনি অট্টহাস্যে,"শুনবি নাকি দাড়ির কারিগুরি?
আমার সাথে চলতে থাকে,প্রায়ই ভূতের হুড়োহুড়ি,
এই দাড়িতে হারিয়েছি আমি ভূতের রাজার জাদুগরী।
সেই থেকেই দাড়ি রাখাটা হয়েছে মজবুরী।
দেখতে যদি চাসরে তোরা তেমন একটি ঘড়ি!
আসিস কিন্তু সাঁঝের বেলা তালবাগানের বাড়ী। "
এমনি অনেক অজুহাতে ডাকতেন তিনি সবারে,
সাঁঝের বেলা গেলে পরেই বলতেন আদর করে,
"আয় বাছাধন, বোসরে সবাই,দেখ-শোন মন দিয়ে,
ভয় পাবিনা, একদম তোরা,এখানে আমিই একা বীর রে।"
এই না বলেই বসেন তিনি মাটির ঢেলার 'পরে।
পায়ের উপর পা টি রেখে, লাঠিতে ভর করে,
গল্প বলা শুরু করতেন ভীষণ আবেগ দিয়ে।
হঠাৎ করে হাসতেন তিনি,ভূতের মতন চোখগুলি পাকিয়ে,
আঁতকে উঠত পরাণ বলতো,"সত্যিকারের ভূত এল নাকিরে!"
দাঁড়িয়ে পড়ে বলতেন তিনি মাটি ছুঁই ছুঁই দাড়িটা নাড়িয়ে,
"এই দাড়িতে পাকিয়ে পাকিয়ে মেরেছি ভূতের রাজাটিরে।"
ঠিক তখনি গাছের থেকে একটি তাল পড়লো বুড়োর ঘরে।
লাফিয়ে বুড়ো, নলিনখুড়ো, দৌড় দিল," ভূত এসেছে ওরে।"
খানিক গিয়ে দাড়িটা নিয়ে হুড়মুড়িয়ে পড়লো খালের ধারে,
বললো কেঁদে,"ওরে বাবারে!ভূতের বাবা মারলো বুঝি মোরে।"
এমন বীর কি তোমরা ভাই কেউ দেখেছো আগে?
ভূতের রাজায় হারিয়ে কিনা ভূতের ভয়ে ভাগে!