তুমি আর আগের মত নেই।
আগের মতন বৈচিত্রতা নেই তোমার মধ্যে।
কেমন বিড়ম্বনাময় চেহারা হয়েছে তোমার!
যখন আমি কিশোর ছিলাম,
তোমার দিকে তাকিয়ে থাকতাম।
অনুভব করতাম তোমার অস্তিত্বকে,
অনির্বচনীয় প্রচন্ডতা ছিল তোমার চেহারাতে
নিমেষে তুমি কঠিন, গুরু গম্ভীর,
বজ্রনিনাদের মত হুঙ্কারে,
নটরাজ নৃত্যের তালে তালে,
উন্মাদ হাওয়ার মতন,
বিজলির চমকে হারিয়ে যেতে।
আবার কখনও বা যক্ষের বিরহে
ব্যথাতুর হিয়া,
ঝরাত অঝোর নয়নের ধারা।
দেখেছি তোমায় রামধনুর সাত রঙ্এ
এলোচুল খুলে দিয়ে
ময়ূরের মতো পেখম ছড়িয়ে
নেচে যেতে আপন মনে।
মাঝে মাঝে হাসতে তুমি
সারা আকাশ জুড়ে।
বুকভরা আনন্দের স্রোত নিয়ে
হিমেল হাওয়ার পরশ লাগিয়ে
শিউলী টগরদের সাথে
মালতি লতায় যেতে হারিয়ে।
আবার দেখেছি তোমায়
না বলা অনুরাগে,
ভ্রমরের মত গুন গুনিয়ে
ধুঁয়াশাচ্ছন্ন হিমেল শাড়িতে
নিঃষ্প্রভ তারাদের লুকিয়ে
হারিয়ে যেতে আমলকির বনেতে।
মাধবীবিতানে যৌবন হয়ে উঠত -উন্মনা।
আকাশের গা বেয়ে, সূর্যের পরশ নিয়ে
মাটির বুকে লাল-নীল-সবুজের সমারহে
ফুরিয়ে যেতে তুমি।
চঞ্চল চপল চাউনি তে
প্রেমের ভ্রমর গুঞ্জনে
অশোক-কিংশুক- পলাশদের কানে কানে
বলতে কত কথা।
অবশেষে যৌবনের স্বতেজতা
হারিয়ে যেত শুষকতার আচ্ছাদনে।
আজ তুমি প্রদুষণে দিশেহারা।
কি বলো! কি করো!
নিজেই জানো না।
বিস্মৃত বার্ধ্যকের মত
ধেয়ে চলো আনমনে।
কেন জানি না!
ওগো ঋতুচঞ্চলা।