কবিতা:- অ-মঙ্গল দহন
কবি:- মনোজ ভৌমিক


আগুন জ্বালিয়ে করছো আজ ধর্মে হোলীকা দহন,
বাজাচ্ছো ঘন্টা ঢাক ঢোল আনন্দিত তনমন।
মহল্লাটা আজকে দেখছি দারুণ উৎসবে মাতোয়ারা,
বলছে সবাই,"হোলীকা জ্বালিয়ে,পাপকে করছি হারা।"
আজকে কিন্তু বলবো আমি একটুখানি মনের কথা,
জানি তোমরা শুনলে পরেই পাবে মনেতে অনেক ব্যথা।
ধর্মেতে ভাই করছি না কিন্তু একটুও হালকা আঘাত,
জানি তোমরা সুযোগ বুঝেই দেবে যে আমায় প্রতিঘাত।
যুগটা তখন দেবাসুরের দারুণ সংঘর্ষতে ছিল জানি,
শক্তিশালী অসুরদের দম্ভটা স্বাভাবিক আমি মানি।
এ চিত্রটা সমাজে আজ নেই নাকি ভাই সবর্ত্র?
বলের কাছে সবাই থাকে একেবারে ভীত সন্ত্রস্ত।
সেদিন কিন্তু ধর্ম নিয়ে হয়েছিল ভীষণ ক্ষতি,
ধর্ম নিয়ে আজও ভাবনা নয় কি হীন মতি?
হীন ভাবনাটাই ছিল সেদিন হীরণ্যকশিপুর মনে,
তাই তো তারে বধ হতে হল আপন বাস ভবনে।
ঠিক আছে ভাই এ পর্যন্ত সঠিক মানছি না হয় আজ,
নারীত্বটাও জ্বললো সেদিন হীন ভাবনা নিয়ে সাজ।
অন্য কোনো সঠিক ভাবনা নিশ্চয় ছিল না তার মনে,
তাইতো তাকে সেদিন মরতে হল নিজের আত্মদহনে।
মানছি আজকে তার মৃত্যুতে সমাজের ছিল না কোনো হাত,
তবুও সমাজ মূঢ় মতি হয়ে নারী মৃতুতে বাজায়নি কি দু'হাত?
আজকে যদি পথের ধারে কোনো মূঢ় মতি নারী জ্বলে,
তুমি কি তখন নির্বাক চিত্তে দেখবে দু'চোখ খুলে?
নারীত্ব নিয়ে আজকে দেখি বড়ই চলছে জল্পনা,
পুরুষ শাসিত এই সমাজে নারীরাও আজো জ্বলছে কি না?
তাই আজও যুগ বদলালেও ধর্মে হোলীকা দহন হচ্ছে কি না?
অনেককিছু বদলে গেছে সময়ের পরিপ্রেক্ষিত,
ঐ শব্দটা যদি আজ বদলে যেত নারীত্বের অজুহাতে,
তাহলে কি নারী শব্দটার অবমাননা হত এইখানে!
সীতা-মার কথা বলবো না ভাই একটুও এক্ষণে,
বললে পরেই সে যুগ-এ যুগ পিঠের চামড়াতে ঢোল বাজাবে।
ঐ ব্যাপারটা জানি আজকেও সবার মনের মধ্যেই কাঁদবে।
ধারনাটাকে আজ একটুখানি বদলে নিলে কেমন হয়?
উৎসবটা হোলীকা দহন না বলে,যদি অ-মঙ্গ ল দহন হয়।