কবিতাঃ-পঞ্চাশ সফরে কবিতা
✍️ মনোজ ভৌমিক


শরতের ক্লান্ত রোদ ছুঁয়ে যায় হেমন্তের মাটি,
অপরাহ্ন ছুঁতে চায় দিগন্ত, সময়টা নয় আজ খাঁটি!
অতি মহামারীর কান্না বুকে কবিতার দিগন্ত সফর,
কবিতা শুঁকতে চায় মাটির সেঁদো গন্ধ, ওখানেও দাঁড়িয়ে মীরজাফর!
কবিতা এখন বড় অসহায়,
দিগন্ত জুড়ে আঁধার ঘনায়!
পড়তে থাকে বিয়াল্লিশের আন্দোলনের মর্মন্তুদ ইতিহাস,
সাতচল্লিশের স্বাধীনতায় জাত ধর্মের বিভক্তির পরিহাস!
বাষট্টি ও পঁয়ষট্টির আগ্রাসী রক্তক্ষয়ী অধ্যায়ের সাক্ষীও হয়নি ও,
বাহান্নর আর্তনাদে একাত্তরে ভাষা কবিতা জন্ম নিল।
আশৈশব দুর্ভিক্ষ আর মন্বন্তর ওকে কাটিয়েছে,
যৌবনের সন্ধিক্ষণে বেকারত্বের যন্ত্রণা সয়েছে।
দেখেছে রাজনৈতিক অস্থিরতা, পর্যুদস্ত গণতন্ত্র, মাথাচাড়া দিয়েছে আতঙ্ক!
একবিংশের দোর গড়ায় হিসেব কষছে মানবিক চেতনার অঙ্ক।
আজও কবিতা মুখ বুজে হাঁটছে.. এই অপরাহ্ন সফরে কী দেখছে ও!
সমৃদ্ধির সিঁড়িতে পা দেওয়া উষ্ণায়ণ, ভয়ঙ্কর ভূমিকম্প, সুনামিতে বদলানো মানচিত্র!
ধর্মান্ধ অন্ধকারে ডুবছে এ পৃথিবী,
চারিদিকে বাজছে বিসর্জনের দুন্দুভি।
কাঁটাতার ছিঁড়ে বেরিয়ে আসা বিশ্বাস ঘাতকদের কার্গিলের কপট দুরভিসন্ধি
সংখ্যালঘুদের অস্তিত্ব ও মাটি হারানোর হৃদয় হারা কান্না শোনে আজ অবধি!
উন্নত দেশ গুলির আগ্রাসী নীতিতে পারমাণবিক ও জৈবিক ছায়াযুদ্ধের প্ররোচনা!
প্রৌঢ়ত্বের দোর গড়ায় পা দেওয়া কবিতার কিংকর্তব্যবিমূঢ়ের মত আজ কেবলি মাটির কান্নাকে শোনা!!
অবক্ষয়ী আঁধারে ডুবছে উদীয়মান ধর্মান্ধ হিংস্র সভ্যতা,
চেতনার গান গেয়ে হেমন্তের হাত ধরে পঞ্চাশ সফরে কবিতা।