পথহারা পাগল
দুঃখী জাহিদ
১.
কমলাপুর বস্তীর পাশ দিয়ে হাঁটছে পাগলটা
শরীরের প্রতি তেমন একটা খেয়াল নেই বললেই চলে
উশকু বাবড়ি চুল ,পরনে হাজার বছরের ছেঁড়া জামা
মুখভর্তি কালো কুঁকড়ানো দাঁড়ি ,তাঁর কি খবর আছে ।
২.
বস্তির ছেলেরা তাঁকে পাগল পাগল করে ক্ষেপায়
সে অপলক দৃষ্টিতে তাঁকিয়ে থাকে, কিছুই বলে না
কেমন একটা অদ্ভদ চাখুনি ,দেখে মায়া লাগে
নিষ্পাপ শিশুদের মত চোখের অশ্রু নিবারন করে ।
৩.
পাগল বলে যাকে ক্ষেপায় সে আসলে পাগল নয়
রেলওয়েতে পরিচ্ছন্ন কর্মচারী হিসেবে কাজ করতো
এই চাকরী সুত্রেই রেবেকার সাথে তাঁর পরিচয়
রেবেকা রেলওয়ের পাশে বস্তীতে থাকতো ।
৪.
দুজনের মধ্যে প্রেম নামক শব্দের ভাব হইলো
যেন কলি যুগের লাইলি মজনু, দেখলেই বুঝা যায়
সুখের চাঁদ কেবল তাঁদের উদরে ঝলমল করছে
মুক্ত বিহঙ্গে উড়ছে ,পাখি দুটি মধুর ভালবাসায় ।
৫.
বিলাসীতা করার কোন ইচ্ছায় ছিলো না তাঁদের
তবু রেলপট্রিতে কাজ করা ছেলের সাথে বিয়ে নয়
রেবেকার মা বাপ সাফ সাফ বলে দিলো
কিন্তু পরাণ কি তাঁরে ছাড়া ঘরে রই ।
৬.
মনের কোণে সকল বেধনা লোকিয়ে ,হঠাৎ একদিন
সারা বস্তী জোড়ে কান্নার বিলাপ মাতুম পড়ে গেল
পাগলীটা নাকি কদম গাছের ডালে ফাঁস দিছে
আর সেই সাথে সভ্যতার অভিশাপ থেকে পালিয়েছে