বাংলা কবিতার প্রোফাইল বলছে এ আসরে আমি পাঁচ বছর অতিক্রম করেছি। এ পাঁচ বছরে বাংলা কবিতার সাথে আমার অনেক স্মৃতি, অনেক অভিজ্ঞতা, অনুভূতি প্রেমকাঁটার মতো বিঁধে আছে মন ও মননে।


বহুদিন বহুকিছু ভেবেছি, মনে মনে পরিকল্পনার "ছক" এঁকেছি - আলোচনা বিভাগে কিছু লিখবো বলে। সাহস পাইনি। বরাবরই আমার সাহস কম। কেবলই ভাবি কোথায় আবার হস ( হসন্ত টাইপ করতে পারিনি)চিহ্ন ভুল হয়ে যায়!


বাংলা কবিতার আসর হলো সৌখিন কবিদের আসর। কিন্তু আলোচনা বিভাগ?  আলোচনা বিভাগ নিশ্চয় বিদ্বান, বিদগ্ধ, প্রাজ্ঞ ও শক্তিমান লেখিয়েদের জন্য। যখনই ভেবেছি লিখবো তখনই আমার নিজের দুর্বলতাগুলো আমাকে চোখ রাঙিয়েছে বার বার।


আসরের প্রবীণ গুণি কবি কবীর হুমায়ুন হঠাৎ আমাকে ফোন করে কুশল বিনিময় করলেন।এক ফাঁকে তিনি আমাকে জানালেন ,  বাংলা কবিতার মাসিক আসরে আমাকে আসর কবি করতে চান। আমার লোকমুখে শুনা একটি প্রবাদের কথা মনে পড়ে গেলো -
  টিনের চালে কাক
   আমিতো অবাক!
আমি সত্যি অবাক হয়েছি। বাংলা কবিতার আসর, হাজারো কবি ও কবিতার জমজমাট আসর। পাঁচ বছর আগে যেদিন বাংলা কবিতা'য় নিবন্ধন করেছিলাম, সেদিনও অবাক হয়েছিলাম। প্রতিদিনই আসরে অনেক কবিতা জমা হয় - আমি নিবিষ্ট মনে পড়ি, আর অবাক হই। কখনো কখনো নাওয়া খাওয়া ভুলে যাই। এভাবে বাংলা কবিতা আমার যতই আপন হতে লাগলো, আমার বউ একে ততই সতীন ভাবতে লাগলো।


যাক, প্রসংগ কথায় আসি। প্রিয় কবি কবীর হুমায়ুন ভাইকে বললাম, ভাই পিতলা শখে যদিও দু'একটি কবিতা লিখি, বাস্তবে আমি একজন চাকর মানুষ। ২৪ ঘন্টার চাকর। শুক্র, শনি এবং রবি'রও চাকর। আমার দ্বারা আসর কবি হওয়া সম্ভব নয়।আর আমি একজন নগন্য শখের কবি। দুই লাইন লিখলে তিনটি বানান ভুল হয়।


মহান কবি আমার কথা হেসে উড়িয়ে দিলেন, কামান দিয়ে গুঁড়িয়ে দিলেন- বললেন,  
            মে জুন যাক
           কবি মুক্তি পা'ক


এরই মধ্যে আসরের এ যুগের রবি কবি অনিরুদ্ধ বুলবুল বার বার রসের ফোঁটায় ডেকে নিয়ে কখন যে চা'য়ের  সাথে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাইয়ে দিয়েছেন জানিনা। ভয়ে ভয়ে দুরু দুরু বক্ষে ১৪ জুলাই বাংলা কবিতার মাসিক আসর আলোর মিছিলে হাজির হয়ে গেলাম। কেউ হাত বাড়িয়ে দিলো, কেউ বুকে জড়িয়ে  ধরলো। আমিতো আবাক!!


ছান্দসিক কবি মনিরুজ্জামান মিষ্টি কণ্ঠে ঘোষণা করলেন, এখন আসর কবি আমাদের কবিতা পাঠ করে শোনাবেন। আমার গলা শুকিয়ে আসছিলো। কি পাঠ করেছি জানিনা। সবাই হাততালি দিয়ে   উৎসাহ দিলেন। আমিতো অবাক!!!


একেই বলে বদান্যতা..  মহৎপ্রাণ কবিগণ শুধু কবিতাই রচনা করেন না, শখের কবিদের সাহসও রচনা করেন। জীবনে এতো ভালোবাসা, এতো সম্মান কখনো আশা করিনি। নিজেকে খুব সৌভাগ্যবান মনে হলো, গৌরবান্বিত মনে হলো।


অনেক অনেক শুকরিয়া বাংলা কবিতা ও আসরের প্রিয় কবি বন্ধুদের প্রতি। জয় হোক কবি ও কবিতার।জয় হোক প্রতিটি মানুষের। আলোর মিছিল এগিয়ে যাক দিক দিগন্তে...