আমার ছোট্ট বেলা তেমনি আছে যেমনি ছিল সেদিন
ডানপিটে এক দস্যি ছেলের বৃষ্টি মাখা সুদিন!
চুপটি করে ঘুমের ভাঁজে মিষ্টি সে সব স্বপ্ন ছুঁয়ে রয়
ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি এসে হটাত যেন সব সত্যি করে দেয়!
স্বপ্নে দেখি, সকাল বিকাল তমাল তলায়
ধানের খেতে তেমনি হাওয়া বয়-
হাত বাড়িয়ে ওই হাওয়াতে নিত্য নতুন আমায় খুঁজে নেয়।
ছোট্ট মনের গোপন ঘরে অযুত অযুত স্মৃতি
লুকিয়ে যেন মনের কোঠায় প্রথম প্রণয় চিঠি।        
  
এখন যদি প্রশ্ন করো-
নেই তাতে কোন খেদ, জটিলতা, একটু গোপন ভয়?
যে কাঁটাটা এখনও বিঁধে মনের কোনো গোপন ঠিকানায়-
ছিল তো-
সাঁঝ সকালে অঙ্ক কষা! আর তো কিছু নয়।  
তেলা বাঁশে উঠছে বানর নামছে ক'বার!
চৌবাচ্চায় জল ভরছে, কমছে, ভরছে আবার!
এমনি অনেক জটিলতা, জটিলতা নয়?


আমার তো বেশ মনে পড়ে-
শীতের সকাল, কুয়াশা দিয়েছে ঢেকে চারিদিক
মায়ের হাতের কাজ হয়নি সারা;
চাদর মুড়ি দিয়ে উঠোনের কাছে আমার অঙ্ক কষা।
স্কুলের পড়ার তাগিদ, সিঁড়ি ভাঙা অঙ্কে আটকে গেছি
মা কে ডেকে ডেকে সারা,
বাবার অফিসে যাবার তাড়া।
ওদিকে একটু ব্যস্ততা-  
ছুঁড়ে দিই অঙ্কের বই-খাতা পুকুরের জলে –
সে পুকুর ভীষণ শীতল
কখনো পড়েনি তাতে সূর্যের ছায়া-
তার জল কনকনে-
আমার মায়ের তখন নিদারুণ বিপন্নতা।
ঝাঁপ দিল নিমেষে গলা জলে
তুলে আনে জটিল অঙ্কের বই নিখুঁত সন্তরণে।
এরপরও বলবে জটিলতা নেই?


পেরিয়েছে অনেক অনেক বছর।
অঙ্ক কষেছি, এখনো কষছি হাজার হাজার!
বানরের স্মৃতি জেগে সমস্ত সত্ত্বায়
হিসেবের অঙ্ক প্রতিটি পদক্ষেপে–
দু'কদম এগোনো- ঠিক দু'কদম পেছনে মেপে!
স্থবিরতা জেগে থাকে সমস্ত কাজে
কে কতটা এগিয়েছে কোন কাজে
চুল চেরা বিশ্লেষণ!  
সবাই সবার এগোনো টা নিক্তিতে মাপে।
এটাই জীবন,  
জীবন তো প্রতিদিন সিঁড়ি ভাঙা-
প্রতিদিনই সরলীকরণ!!