নাই বা এলে দুখের রাতে
স্বপন ছেঁড়া সোহাগ চিতে;
নাই বা এলে প্রাণের মাঝে
ফুল ঝরানো আনকো সাঁঝে
দোদুল দোলায় দোলন চাঁপায়
দুলেছি গো রিক্ত সাজে—
আমার দুখের সাথী আঁধার রাতি
বৃষ্টি বিনে বুকের কোনে
মর্মে ওঠে গুঞ্জরী –
নাই বা এলে স্বপনচারী
দিগবিদিশায় মৌন প্রণয় সঞ্চারী।


আমি দু হাত পেতে কাঙাল চিতে
রইনু তোমার পথের পানে চেয়ে
ফাগ লাগে আজ বসন ভাঁজে  
অরূপ তুমি বকুল সাজে
অঙ্গছায়া পীত বাসে –
নাই বা এলে দুখের রাতে
চোখের জলে রূপ ধুয়ে আজ  
যাই ফেলে কাজ আন পথে
পরশ আমার রইবে সাথে
ঘুমের মাঝে টুটবে স্বপন
কঠিন পরশ আচম্বিতে!  
নাই বা এলে আঁধার রাতে
এই আমারই নিঃস্ব বিথে;
নাই বা এলে চোখের মাঝে
ফুল ঝরানো আনকো সাঁঝে।


রূপের ডালি সাজিয়ে রেখো
ভ্রমর রত গুঞ্জনে–
ভ্রূভঙ্গিতে তড়িৎ খেলে
আঁধার পশে অঞ্জনে।
নিত্য উধাও বিজন বনে
নিখাদ মৃত্যু আমার গানে
বিষাদ বীণা, বিষের বেণু
হাওয়ায় ফেরে ফুলের রেণু
মুক্তি লোটে নৃত্য চপল পায়
আমার প্রাণের কথা গানের ভোরে
দূরের পানে ধায় –
আমি মুক্তি খুঁজি –
মুক্তি লোটে নৃত্য চপল পায়।


নাই বা এলে প্রাণের কথায়
হৃদয় বিতান ছায়—
নাই বা এলে বিধুর ব্যথায়
নিলাজ ভরসায় –
আমার পথের মাঝে পথ হারালো
বেলা বয়ে যায় –
দূরের পানে দু চোখ রেখে
আমার আসীন সুখের সুর বুনে যাই  
ছন্নছাড়া কান্না সুধায় –
দু চোখে মোর দ্বৈত দ্বিধা
আমার প্রাণের মাঝে আছে সুধা
নেবে কি তায় আপণ মেনে?
নাই বা এলে দুখের দিনে
বুক চোঁয়ানো শোকের গানে
ভুল করে আর বেহাগ গেয়ে
এমনি করে মরব না –
আমার বক্ষ জুড়ে সকাল সাঁঝে  
অলীক প্রেমে কাঁদব না –।।