ষাঁড় হাঁকিয়ে চলেন ভোলা মর্ত ধামের পানে।
দুর্গা দেবী চেঁচিয়ে বলেন কণ্ঠে আদর টেনে-  
স্যানিটাইজার মাস্ক ও সাবান আনবে দিলাম বলে।  
নইলে জেনো চলেই যাব- দু-চোখ যেদিক চলে।        


তিন দিন পর অবসন্ন- এলেন ভোলা ফিরে  
লক্ষ্মী সরো কোথায় গেলি? পুঁটলি নে না ধরে-
অনেক খুঁজে কালো বাজারে পেলাম সবই সামান
ফেরার পথে পুলিশ ধরে চাইল কেনার প্রমাণ!


যতই বলি ভোলা মহেশ্বর- কৈলাসেতে বাস
সে সব কথা শুনছে কেবা? ছড়ায় মনে ত্রাস।
অনেক খুঁজে তল্লাশিতে বাঘ ছাল টা পেলে
আটকে দিল ফাটকে তে পাচারকারী বলে।


অনেক কিছু বলে কয়ে জামিন শেষে দিল
জামিনদারির শর্ত মতন বাঘ ছাল টা নিলো।
কেঁদে কেটে বলি তাদের নিসনে ওটা ভাই
ওটাই শিবের প্রমাণপত্র, চাইরে ওটা চাই।


এক যে ছিল গেঁড়ে পুলিশ হেঁড়ে গলায় হেঁকে
তাড়িয়ে দিল এক কাপড়ে শশুর বাড়ি থেকে।
ফেরার পথে ভিক্ষে করে যা পেয়েছি খাই-  
প্রাণ বাঁচিয়ে কৈলাসেতে পালিয়ে এলাম তাই।


জিনস প্যান্টে আমায় দেখে আটকে দিল গেটে
যতই বলি আমিই ভোলা, নন্দি ব্যাটা কান দেয় না মোটে।
অনেক কিছু ভুজুং ভাজুং ছিলিম দিলাম ঘুস  
তবেই নন্দি বলল আমায়- তুই এইখানেতে বুস।    


এরপরে এক ফাঁক তালেতে পড়েছি ঢুকে ঘরে
কে আছিস'রে পার্বতীকে ডাক পাঠা না ওরে।  
সকাল থেকে জল পানি নেই ছুটছে ইঁদুর পেটে
দুর্গা এসে চিনলে তবেই এই ঝামেলা মেটে।


দুর্গা দেবী এলেন ধেয়ে শিবের দুঃখ শুনে  
নির্নিমেষে নিলেন তাঁকে ত্রি-নয়নে চিনে।
হাপুস নয়ন ভাসেন ভোলা মনের গ্লানি ভুলে
আমিও তোমার সঙ্গে যাব তুমি বাপের বাড়ি গেলে।  
___________________________


পাঠের সুবিধার্থে প্রথম পর্ব টি নিম্নে সংকলিত করে দিলাম...
___________________________


শিবের সর্বনাশ ১ম (রম্য রচনা)
- অভিজিৎ জানা
শিব কে ডেকে দুর্গা দেবী বলল মুচকি হেসে-
লক্ষ্মী সোনা! একবারটি যাওনা বাপের দেশে।
কোথায় কোথায় কেমন কেমন হচ্ছে আয়োজন!
এবার পুজোয় আসছে কি কি নতুন বিনোদন!    


এই না শুনে আয়েশ ভেঙে বললেন শিব ঠাকুর-
এই বছর টা ক্ষান্ত দাওনা! একটা বছর সবুর।
আসছে বছর আবার যেও বাপের বাড়ির দেশে-  
নইলে জেনো কোয়ারেন্টাইন জুটবে ভাগ্যে শেষে।


এইনা শুনে দুর্গা দেবী আকাশ থেকেই পড়েন!
এ কি তোমার আজব কথা! কি যে খবর দিলেন!
কোয়ারেন্টাইন করবে কেন! আমায় কাছে পেলে-
আত্মহারা ছেলে বুড়ো পাত্র মিত্র সক্কলেতে মিলে।      


তাই তো বলি খোঁজ খবরটা রাখছ না তো কিছু
বিটকেলে এক ভাইরাস এসে নিয়েছে সবার পিছু
হাঁচি কাশি শ্বাস কষ্ট সর্দি জ্বরে পৃথ্বী যে জেরবার    
এই বাজারে হ্যাপা করে মর্তে যাওয়া! খুবই কি দরকার?    


ফালতু কথা বোলো না তো! মর্তে আমি যাবই-
বছর ভরে একবারই যাই- না বললে গলায় দড়ি দেবই।    
বাচ্চা গুলোও মুখিয়ে থাকে এই কটা দিন তরে-
পুজোর ছুটির লুটবে মজা মামার বাড়ি ঘুরে।  


এতেক শুনে আত্ম ভোলা কুঁচকে কপাল ভুরু  
ধুত্তেরিকার সংসার রে, আবার হলো শুরু!  
লক্ষ্মী, গণেশ, কেতো, সরো সবাই কে দাও ডেকে
মামার বাড়ি কে কে যাবে- সুধাই ডেকে ডেকে।


সবার আগে লক্ষ্মী এলো- মুখটি লক্ষ্মী পানা
মামার বাড়ি যাবই যাব, শুনছি না তো মানা।
ব্যবসা পাতির অনেক ক্ষতি হচ্ছে যে এই বার
আমার তো তাই মর্তে যাওয়া ভীষণই দরকার।


গণেশ এসে বলল ভেবে- আমিও না হয় যাই-
এই কটা দিন ইচ্ছে মতন মণ্ডা মিঠাই খাই।
বছর ভরে ভিক্ষা করে কি আর এমন জোটে?  
বাবার দেখি হচ্ছে বয়স, বুদ্ধি তো নেই মোটে।


সরস্বতী নিপুণ অতি স্পষ্ট ভাষী মেয়ে-  
ফিগার কেন করব খারাপ মর্ত ধামে গিয়ে!
সেই তো শুধু লুচি পুরি ভাজা ভুজিই মেলে
যেতেই পারি একটা সর্তে- ডায়েট মেনু পেলে।  


কেতো এসে বলল শেষে মুখটা একটু মুড়ে-
সবাই যখন যাবে তখন আমিও আসি ঘুরে।
এখন তেমন কদর নেই আর নধর কান্তি দেহ  
ভাবছি এবার জিমে যাব সিক্স প্যাকের ই মোহ।  


অতঃপরে অসুর এসে করুণ সুরে বলে
সবাই তোমরা যাচ্ছ চলে আমায় একলা ফেলে!  
আমিই যদি পড়েই থাকি মারবে দেবী কাকে?
করোনা-সুর ফুটেজ খাবে! বলবে কি বা লোকে?


শিব দেখলেন মহান ফ্যাসাদ- কি যে এবার হবে!  
পত্নী গেলে বাপের বাড়ি- শেষে কি হাত পুড়িয়ে খাবে!
বললে তিনি সহজ হেসে কাঁচুমাচু মুখে-  
মর্ত ধামে হচ্ছে টা কি আসছি আমি দেখে।
_____________________________