===========================
শ্রাবণ গেল ভাদ্র এলো, আর কটা দিন বাকি—
বুকের ভেতর ঢ্যাং-কুড়াকুড় বাদ্যি বাজায় ঢাকি।  
বলল হেঁকে দুর্গা দেবী- শিব ঠাকুরে ডাকি      
সময় হোল মর্তে যাওয়ার, চলবে নাকো ফাঁকি।


গেল বছর নম নম! কোনক্রমে অল্প আয়োজন-  
এবার কিন্তু রীতিমত জোরকদমে চমক প্রয়োজন            
ছেলে মেয়ে অসুর সাথে চারটি দিনের তরে
সপরিবার আসব সবাই বাপের বাড়ি ঘুরে।

ভোলেবাবা ঘুমিয়ে ছিলেন আয়েশ করে ধুলায়
হুমকি শুনে চমকে গিয়ে উঠল বসে ত্বরায়।    
গঞ্জিকাতে দম’টি দিয়ে চক্ষু করে লাল  
বললে তিনি- চলেই গেল আরও একটি সাল!


দিনে দিনে বাড়ছে বয়েস; মাফ করে দাও ভাই
শরীরটা তে যুত পাই না- বলছি তোমায় তাই    
অল্পে এখন হাঁপ ধরে যায় ব্লাড প্রেশারও হাই
“সুগার” সেটাও কন্ট্রোলে নাই- কোন দিকেতে যাই!  

তাই বলি কি- এই বছরে নাই বা গেলে ধরায়
তার ওপরে আমদানি নাই মৃত্যু মড়ক খরায়
জমক চমক করবে কে আর! আপনি পেলে বাঁচে  
দেখছ না সব জরা-ক্লিষ্ট- অনটনের ছাঁচে!  

দুর্গা দেবী ক্ষেপেই ভীষণ বকলে শিবে- “সাট-আপ”          
রাখছনা তো কোনই খবর! এখন বাজার স্টার্ট-আপ!
মানছি অনেক জব গিয়েছে রুজি এবং রোজগার
তাই তো আমার মর্তে যাওয়া ভীষণই দরকার।

ব্যবসাপাতির ভীষণ ক্ষতি; মনমরা সব লোকে
উঠবে তারা আবার মেতে মর্তে আমায় দেখে।  
তাই তো বলি এই বেলাতেই গড়িয়া হাটায় যাও
লেটেস্ট ফ্যাশন আনবে কিনে যেমন সেথায় পাও।  


পোশাক আশাক কি আর হবে! একটি বছর পার
সর্দি জ্বরের ভয় পেয়ে সেই হওনি ঘরের বার  
ওই গুলোকেই ইস্ত্রি করে সুশ্রী সাজো বেশ  
ফালতু কেন এই অবেলায় দিচ্ছ আমায় কেস!


জানতাম তুমি বলবে এটাই; মুরোদ তোমার জানা    
ভিক্ষে করে কি আর জোটে! ওই তো দু-চার আনা!
চিন্তা তোমার লাগবেনা আর ব্যাকআপ আমার আছে  
স্বল্প সুদে ঋণ নিয়েছি নারদ মুনির কাছে।
  
কি যে জ্বালা! কেমন করে তোমায় বোঝাই বল  
আগের বছর পুলিশ কেসে বাঘছাল’টা গেল    
হলদে কালো পোলকা ডটে মানায় না শিব মোটে  
এই পোশাকে মর্তে গেলে কি জানি কি লাঞ্ছনাটাই জোটে!

তার'চে বাবা এখান থেকেই শপিং কর বেশ
অফার টফার সবই পাবে ডিসকাউন্ট ও লেশ।  
বদলে তুমি নিতেই পার; নাই এক্সট্রা কোনই চার্জ        
মেগা সেলের রমরমা খুব- এপ্রিল টু মার্চ।    
  
এখন তো সব অনলাইনে- শিক্ষা এবং বাজার—
কাজ কি বল গড়িয়া হাটায় কাকতাড়ুয়া সাজার!
যেমন খুশী অর্ডার কর- অন-এরাইভাল দাম
লক-ডাউনে মাউস ক্লিকেই হচ্ছে সকল কাম।।
============================
গত বছর পুজোর আগে এই কবিতার দুটো পর্ব লিখেছিলাম... এবারে আরও একটি  পর্ব!