কবিতাটিতে কয়েকটি সাঁওতালী ভাষার শব্দ ব্যাবহার করা হয়েছে ।সাঁওতালী ভাষা একটি প্রাচীনতম ভাষা।প্রাচীন ইরানীয় ভাষার মার্জিত রূপ  যা ঋক বেদের ভাষা (প্রাচীন সংস্কৃত) এবং পারসী ধর্ম গ্রন্থ জেন্দা-আবেস্তার ভাষা এদের চেয়েও প্রাচীন। ঈহুদীদের ভাষা হিব্রু একটি  সতন্ত্র ভাষা, প্রাচীন সংস্কৃত-এর সমসাময়িক। তুলনা মূলক ভাবে গ্রীক,ল্যাটিন নতুন। পৃথিবীর অধিকাংশ আধুনিক ভাষার জন্ম এই ভাষা গুলি থেকে।এরা বহু ভাষার জননীরা আজ মৃত। কিছু মাতব্বরের জন্য। অভিজাতরা ভেবেছে এই ভাষা তাদের পৈতৃক।জনতাকে লিখতে পড়তে বলতে দেয় নি।জনগনও এই ভাষা গুলি পরিত্যাগ করে। তাই এদের মৃত্যু হয়। কিন্তু   সাঁওতালী ভাষারএরকম মাতব্বর ছিলো না। তাদের সবাই সমান। তাই আজো জীবিত। হাজার হাজার বছর পরেও ভাষাটি এখনো পঁচানব্বই ভাগ বিশুদ্ধ। কিছু দিন আগেও কোন  লেখার হরপ ছিলনা।পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু  হরপ আবিষ্কার করেন যাকে ওলচিকি হরপ বলে । তাদের স্বর লিপি যে কি, কে জানে কিন্তু গান আছে নিজস্ব মৌলিক সুরে।এ রকম একটি সাঁওতালী গানের আঞ্চলিক বাংলা তর্জমা । দেলাইয়া মানে এস, হাম দ মানে আমাদের, অড়ারে মানে বাড়ীতে,অড়া মনে বাড়ী, হিজুপে –এখানে, সাঁড়া-পুরুষ (ষাঁড় থেকে) মান-মান কচু,তালাই- খেজুর পাতার আসন, জিরান-বিশ্রাম, শিতান- বালিশ।
প্রসঙ্গত বলি,আমি সাঁওতাল জন নই।সাঁওতাল ভাষা লিখতে, পড়তে জানি না। বুঝিওনা বলতেও পারি না।এক জন সাঁওতাল সহপাঠীর কাছ থেকে গানের বাংলা মানে জেনে লিখলাম। যদি কারো এই গান ও ভাষা জানা থাকে তবে অনিচ্ছা কৃত ভুল মাফ করে দেবেন।


- দেল্যাইয়া দেল্যাইয়া হাম দ অড়ারে -


দেল্যাইয়া দেল্যাইয়া হাম দ অড়ারে,
বইসত্যে দিবঅ তালাই পাইত্যে দক্ষিন উঠানে,
দক্ষিন উঠান গোবর নিকান পোখর গোড়া রে।
তাল পাতার পাখা দিবঅ গতর জুড়ানি,
জাম বাটীতে পিতে দিবঅ পান্তা আমানি,
জল খাবারে মহুল গুড় আর ঢেঁকি কুটা চিড়া রে।
দুপ্যইরা ভাত চালি ধানের,
লংকাসানা জঙ্গলী মানের,
খাইও স্যাঙাত মাংসের ঝোল বনা মুরুগ সাঁড়া রে।
শিমওল তুলার মাথা শিতান,
নকশী কাঁথার নরমা বিছান,
জিরান লিব্যে শুইয়্যে বইস্যে মুইদ্যে নইয়ন জোড়া রে।


বিকাল বেলা ঘুইরে  দেখঅ সাঁওতালীয়া পাড়া রে,
দেল্যাইয়া দেল্যাইয়া দেল্যা হিজুপে,
দেল্যাইয়া দেল্যাইয়া হাম দ অড়ারে।