আমার ছুটির দিনটা শুধু তোমার জন্য,
সারাদিন বাসায় বসে তোমাকে জ্বালানো ছাড়া
আর তেমন কাজ নেই বললেই চলে।


তোমার মিষ্টি শাসন পেতেই বারংবার
এমন করি আমি,
তোমায় ঘিরেই আমার সব দূরন্তপনা
সে নিশ্চই তোমার অজানা নয়।


আমার হাত থেকে রেহাই নেই আজ!
এই ভেবে তোমার সরল প্রস্তাব- চলো ঘুরে আসি,
ঠোটের কোণে তৃতীয়া তিথির চাঁদের মতো
এক চিলতে হাসি দিয়ে বললে- এ্যাই ওঠোনা, চলো
জলদি করো, চলো তোমার ক্লান্তি ঝেড়ে আসি।


তোমার মুখ থেকে এমন প্রস্তাবে রাজি হওয়া ছাড়া
আর কোন উপায় যে আমার সামনে নেই,
তাই নিতান্তই গোবেচারার মতো
নির্দ্বিধায় আমি রাজী হয়ে গেলাম।


আমি সাধারণত ফুল হাতা শার্ট বেশি পড়লেও
আজ পড়লাম তোমার মেজাজের মতো টকটকে লাল টিশার্ট;
সঙ্গে আকাশের মতো নীল রঙের জিন্স
আর তুমি বরাবরের মতোই প্রসাধনহীন।


সবুজ আর প্রাণোবন্ত সরিষা ফুলের মতো
হলুদ-সবুজে মেশানে সালোয়ার-কামিজে
তোমাকে কতোটা নির্মল লাগে তা যদি বোঝাতে পারতাম,
তবে আমিই হতাম পৃথিবীর সেরা কবি।


ছুটির বিকেলে আমার যন্ত্রচালিত দ্বি-চক্রযানে চড়ে
তোমায় নিয়ে হারিয়ে গেলাম দূর অজানায়,
যেখানে সবুজের মাঠে দিগন্ত মিশেছে; সেই প্রান্তে
মাতাল হাওয়ায় অনেকক্ষণ তোমার হাত ধরে হেটে বেড়ালাম।


কাঁদা মাটি ও আলপথ বেয়ে অজানা এক রেলপথে
যেন অনন্তকাল হেটেছি তুমি আর আমি,
হিমেল হাওয়ায় তোমার এলোচুলের গন্ধে
আমার সমস্ত স্বত্ত্বা জেগে ওঠা শিহরণ দেখে
তোমার অদ্ভুতুরে হাসির মানে আমি বুঝিনি!


গন্তব্যহীন সে যাত্রায় তুমিই ছিলে
আমার একমাত্র অবলম্বন,
দ্বিচক্রজান কোথায় রেখেছি ততক্ষণে
তাও গুলিয়ে ফেলেছি।


বাড়ি ঘর নেই জনমানবশূন্য এমন পথে
দু'জন পাশাপাশি হাঁটছি তো হাঁটছিই,
এতোটা কাছাকাছি যে- হাত বাড়ালেই স্পর্শ পাবে
মুখ বাড়ালে মাতাল করা চুম্বন!
যদিও সন্ধ্যায় সেই নিরবতা ভঙ্গ করিনি কেউ
অনাদিকালের মুগ্ধতা নিয়ে শুধু হেটেছি তোমার পাশে।


হঠাৎ পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটে আসা দমকা হাওয়ায়
ভয়ে শিউড়ে উঠলে তুমি,
চিত্কার দিয়ে জড়িয়ে ধরলে আমায়।
আমার মাঝে তুমি আশ্রয় খুঁজে পেয়েছো ভেবে
নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে হয়েছিল,
আমার বুকের ঠিক মাঝখানে ছোট্ট খুকীর মতো
এমনভাবে লেপ্টে ছিলে যে- মনে হয়েছিল
তোমার জন্মই হয়েছে ওখানে লেপ্টে থাকার জন্যে।


তোমার এমন পাগলামিতে লজ্জায় লাল আমি
তবুও সাহস করে তোমার নির্লিপ্ত মুখটা তুলে ধরে
বললাম- পাগলী, ভালোবাসি তোকে।


-রাত: ১০টা, ১৬ নভেম্বর ২০১৬ইং
গুলশান-১, ঢাকা-১২১২।