জানিস, আমি এখন সন্নাসী হয়েছি
তোর বিয়ের পর থেকে বাড়ি ফিরি না
কোথায় থাকি, কি খাই?
চিন্তা করিস না, এটা তোর না জানলেও চলবে
তুই খোঁজ নিবি তোর স্বামী মশাইয়ের
একটু স্বার্থপরই থাকনা।


তোকে বিয়ে করার ইচ্ছে ছিল, স্বপ্ন ছিল
অথচ তোকে বিয়ে করতে হলে চাকরী করতে হবে
তুই হুকুমের দাসী হলে, আর আমার চাকরীও হলো না
এমন জানলে কি আর তোর সাথে প্রেম করতাম!
যা হউক তোর বিয়ে হল শুকা দ্বাদশীতে
আর আমি চাঁদের আলোয় ঘর ছাড়লাম মনের দুঃখে
যে ঘরে তুই আসলি না সে ঘরে কি আমি থাকতে পারি?


মা খবর পাঠিয়েছে, একবার পোড়া মুখটা দেখতে
তার বাতের ব্যথা আবার বেড়েছে
উঠতে পারেন না বিছানা থেকে
মায়ের কাতর চিৎকারে চোখ মোছে
হররোজ পাশের বাড়ির ষোড়শী
জানাল বাউল ফকির বেলাল শাহ।


বাবা এখনো কাজ করে রাজাকার ডাগ্গিলের বাড়িতে
পেট চুক্তি, বেলা ডুবলে ১কেজি চাল আর ২৫ টাকা
এই দিয়ে চলে আমাদের বিত্ত।
বেজন্মার বাড়িতে কামলা খাটে মুক্তিযোদ্ধা
আর কি শুনব বল?
ছোট ভাইটা কলেজে যায় না
নেশায় মত্ত থাকে, ঘুরে বেড়ায় রাত-দুপুরে
নোংরা রাজনীতি করে, চাঁদা তুলে
একটু আধটু মারপিট করে পার্টির স্বার্থে
তার দুএকটা কেস নিরবে কাঁদে নিরহ ধর্ষিতার।


তুই বল বাবা কি এজন্য যুদ্ধ করেছিল?
মাঝে মাঝে মনে হয় সন্নাসী নই
বিদ্রোহী হই, স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে
তোদের সভ্য মুখোশের সমাজটাকে
জ্বালিয়ে পুুড়িয়ে ছারখার করে দেই
ফিরিয়ে আনি আর একটা একাত্তর
গ্রেনেড হাতে লাল-সবুজের নিশান মাথালে বেধে
হই এক বিংশের যোদ্ধা।
ঘর ছেড়ে ভুল করেছি, ভুল করেছি
নষ্ট নিয়তি মেনে পাপ করেছি, পাপ করেছি
যার প্রায়শ্চিত্ত করে প্রাণ দিব কোন এক ভরা জোৎস্নায়।
দোহাই তোর, তুই আমার জন্য কাঁদবি না।