চেয়ে দেখি সজনে ডালটা ঠিক আগের মতোই আছে।
মৃদু মন্দ বাতাসের ঝাঁক ছেঁড়া দ্বীপে নোঙর তুলে
কার জানি পথ চেয়ে বসে আছে
বড় কম সময় নয়; বেশ কয়েক যুগ তো হবেই!


সালাম, শফিউরের অতৃপ্ত আত্মারা এসেছিল কালও;
আমি কোন সদুত্তর দিতে পারিনি।
বলতে পারিনি আমি ভাল আছি,
আমার পাণ্ডুর মুখ দেখে যা বুঝার তাঁরা বুঝে নেয়।
অতঃপর এক সাগর পুঞ্জিভূত ক্ষোভ আর ঘৃণার
অকাল দীর্ঘশ্বাস!


রাতের পর রাত, দিনের পর দিন কেঁদে কেঁদে হয়রান হই
কেউ শুনেনি। শোনার প্রয়োজনও বোধ করেনি।
কেউ কথা রাখেনি,
শুকুনিরা ব্যবচ্ছেদ করে আমার অন্তরাত্মা !
এখনও পীচ ঢালা কালো পথে শহীদের রক্তের ছোপ ছোপ দাগ
দুঃখিনী মায়ের চোখের জলে মুছে যায়নি ।


ডাহুক ডাকা রাত অবশেষে ভোর হয়, ডেকে আনে প্রভাতফেরি
স্বর্গ থেকে এসে মিছিলে যোগ দেয় রফিক ভাই।
জাব্বার ভাই।
তারা সক্রোধে চিৎকার করে।
জানতে চায় ফুল নিয়ে কেন এতো কাড়াকাড়ি?
কেউ জবাব দেয় না।
আবারও শপথের মালা গলে পড়ে।
সূর্য দেব রক্তিম হওয়ার আগেই সুতো ছিঁড়ে যায়।  
কেউ কথা রাখে না।
ফুলগুলো শহীদ মিনারে লাওয়ারিশ পড়ে থাকে।
কেউ খবর নেয় না।


এমনি করে ফিবছর নগ্ন পদ বিক্ষেপে ৮ই ফাগুন আসে।
শহীদের বেদীতে তোমাদের পুষ্পদান আমায় পুলকিত করে  
সভায় সভায় আশ্বাসের ফুলঝুরিতে আমার নিঃশ্বাস বেড়ে যায়
অতঃপর সব কিছু ভেঙ্গে যায়, স্বপ্নগুলো ফিকে হয়ে আসে,
আমি অবাক চোখে কেবল তাকিয়ে দেখি কেমন করে
চেতনার বহ্নি শিখা বিশ্বায়নের উদোম হাওয়ায় মিশে!