নীল খামে মোড়া এক প্যাকেট ভালোবাসা পার্সেল করেছিলাম! পাওনি?
কিভাবে পাবে বল? হরতাল অবরোধ আছে যে। তালের অভাব নেই তো!  
আজ ১৪ই ফেব্রুয়ারি।
কাল থেকে আমি কিছু খাইনি।  
ভেবেছিলাম তুমি আসলে ব্রহ্মপুত্রের পাড়ে বসে এক প্যাকেট বাদাম হজম করব।
সে তো আর হলো না।  
রাক্ষুসে পেট্রোল নিজেই তোমাকে খেয়ে নিল।
বার্ন ইউনিটে তোমাকে আমি চিনতে পারিনি।


তুমি কোন চিন্তা করো না। এখনও আমি রোজই একটি করে চিঠি লিখি।
ঠিক আগের মতো। তোমার সেই চিরচেনা হাতে। বানান ভুলও আগের মতোই আছে।
তবে এখন আর চিঠি আগের মতো ডাকে দেই না।  
রানার, পোস্টম্যান ভাইকে আর কষ্ট দেই না।
নিজেই পায়ে হেঁটে তোমার কবরের উপর রেখে আসি।
হরতাল অবরোধ ছেড়ে দিলে কোনো এক ফাঁকে সময় করে পড়ে নিও।


জানো, তোমার চিঠিগুলো একটিও আমি হারাইনি।
প্রত্যেক পূর্ণিমা রাতে আমি আর চাঁদ মিলে সেগুলো তোতা পাখির মতো মুখস্ত করি।
জানো, এখন রোজই বাংলা একাডেমী প্রাঙ্গণে কবিতা সন্ধ্যা হয়।
সেখানে আমি তোমার চিঠিগুলো পড়ে শুনাই। কাঁদি না।
তোমার স্বপ্নের সোনার বাংলার কথা বলি। কেউ কেউ হাসে। আমি কিছু বলি না।


আচ্ছা বলতে পারো, এখনও আমি কেন পত্র লিখি?
এখনও আমি কেন একটি শাদা পায়রার খুঁজে ৬৮ হাজার গ্রাম ঘুরে আসি।
শহরে-বন্দরের অলি-গলিতে ঘুরে বেড়াই।
কেউ জানে না। তোমার একটি স্বপ্ন ঘিরে আমি হাজার স্বপ্ন আঁকি।
কেউ জানে না। তোমার ভালোবাসাই আমার আনবিক শক্তি।  


শেষ চিঠিতে তুমি জানতে চেয়েছিলে না, আচ্ছা বলো তো দেশের কী হবে?
আমি বিশ্বাস করি। মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি। একদিন আমাদের ভুল ভাঙবেই।
দেশপ্রেম জাগবেই। ক্ষমতার মোহ টুটবেই।
তোমার স্বপ্ন পূরণ হবেই। ভালোবাসার শক্তি কখনও ফুরিয়ে যায় না।।