কেউ জানে না। ওরা অনেক শক্তিশালী! পারমাণবিক বোমা। ক্ষয় নেই।  
কোথাও ব্যবহৃত হয়নি তো কোনো মূল্য নেই।পচা বাসি মূলা।  
শুকনো ঝরাপাতা তাও উনুনে প্রেম দেয় দেয়। ওদের তাও নেই।
একেবারে সিগারেটের ছাইপাঁশ। ভাঙাকুলা। কোনো কাজেই লাগে না।


আমি একদিন সেই তেজ দেখেছি। তখন মাথা গরম বেলা।
হতাশার খাদের কিনারে একা দাঁড়িয়েছিলাম। দাঁড়িয়েছিল আরও
কিছু কচি কাঁচা মুখ। সেদিন কেবল আমি একাই দেখেছিলাম।  
আর কেউ দেখেনি। সনদপত্র গুলো জলে ফেলে দিয়েছিলাম। ভিজেনি।
এক প্রকার জোর করেই জলে চুবিয়ে মারতে চেয়েছিলাম। মরেনি।      
কেউ দেখেনি।
পেট্রোল ঢেলে ওগুলো আগুনে পোড়াতে চেয়েছিলাম। তাও পোড়েনি।  


তাহলে কী হবে? এই সব জগদ্দল পাথর! কেউ বলতে পারেনি।  
যেমন আমি পারিনি। তেমনি।  
অতঃপর পুরাতন টিনের ট্রাংকের এক কোণে জমিয়ে রেখেছি।
নে বাবা, এবার ঘুমিয়ে থাক। যত পারিস ঘুম যা। আমি জাগাতে আসব না।
কেবল যেদিন আমাদের ক্ষয়ে যাওয়া বোধ গুলো জেগে উঠবে!
সেদিন আমি আসব। তুইও সেদিন জেগে উঠিস।


দেখিস না? কেমন ঘুমিয়ে আছে ম্যাগনা কার্টা! চার্টার অব সিটিজেন!
তেমনি ঘুমিয়ে আছে মদীনা সনদ। চার্টার অব মদীনা। এমনি আরও আছে।  
কারো কিছু আসে যায়নি।
এমনি করে আরও ঘুমিয়ে আছে কতো অসহায় ডানাকাটা নীলপরী।
লালপরী। সবুজপরী।  
তুই তবে কোন ছারপোকা?  


মুক্তিযুদ্ধ নিজেও তো একটি সনদপত্র। মহান ভাষা আন্দোলন সেও।
মানচিত্রটা স্বাধীন হয়েছে। আমরা স্বাধীন হইনি। পরাধীনই রয়ে গেছি।  
২১শে ফেব্রুয়ারি আসলেই খালি পায়ে প্রভাত ফেরিতে যাই। বেশ।
এরপর আর কিছুই মনে থাকে না।
কাগজের সনদপত্র হয়ত কুটিকুটি করে ছিঁড়তে পারি।
দেশ বদলে দিতে পারি না। দেশের মানুষ বদলে দিতে পারি না।
হতভাগা ছিলাম। এখনও আমি হতভাগাই রয়ে গেছি। সনদপত্র ঘুমিয়ে আছে।
কোনোদিনই কি আর জাগবে না? ভয়ংকর দুঃস্বপ্ন দেখে।