এক দার্শনিক বললেন, মশা-মাছির চেয়ে শক্তিশালী প্রাণী ত্রিভুবনে আর নেই।  
বেশ। আর যায় কোথায়! তুমুল করতালি। বিশাল আবিষ্কার। সবাই ধন্য ধন্য
করতে লাগলেন। এতো বড় জ্ঞানের আঁকর!!


আরেক দার্শনিক বললেন, তাই তো! মানুষকে কামড়ায়। হাতিকে কামড়ায়।
বাঘ-সিংহ তাদেরকেও কামড়ায়! কেউ বাদ যায় না। সাধু সাধু!!
ইস! ইস!! এতো বড় আবিষ্কারটা একদম আমার হাত ফসকে বেরিয়ে গেল!


এমন সময় এক বোকার হাতে একটি মশা বসলো। যেই না কামড় দিতে যাবে,
এমনি ঠাস করে শব্দ হলো। মশাটি কোনো নিঃশ্বাস নেওয়ারও সুযোগ পেলো না।  
নিঃশব্দে মারা গেলো।


বোকা লোকটি ভাবলো, ত্রিভুবনের শ্রেষ্ঠ প্রাণীটি আমার হাতে মারা পড়লো!
আমিই জগতের সবচেয়ে বড় বীর! এইখানে আমাকে শোভা পায় না।
সে স্থান ত্যাগ করলো। কেউ কিছু বুঝতে পারলো না। হা করে তাকিয়ে রইল।


কলিম উদ্দিন পি এইচ ডি করছে। সারা গেরামে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
এই শুনেছিস! ছলিম উদ্দিনের হেবলা পোলাডা নাকি গবেষণা করছে!
যাই-তাই ব্যাপার না! গরু নিয়ে গবেষণা। বিশাল ব্যাপার। মঙ্গল গ্রহে গবেষণা
হয়েছে। গরু নাকি মানুষের চেয়ে অনেক বেশি বুদ্ধিমান!
কী কস? হু ঠিক কথাই কইছি। তাইলে তো ছলিমুদ্দিনের পোলা ঠিক কাম করতাছে!
এই খবর কেউ বিশ্বাস করলো। আর কেউ বিশ্বাস করলো না। অবিশ্বাস করলো।
যারা বিশ্বাস করলো তাদের কেউ কেউ হিংসা করলো।
যারা অবিশ্বাস করলো তাদের কেউ কেউ মনে আশীর্বাদ করলো। তাই যেন হয়।
আমাদের গেরামের মুখ যেন আলোকিত হয়।


খেলা-ধুলা জীবনেরই অংশ। কিন্তু জীবন নয়। আগে ফুটবল ঈশ্বর ছিলো।
এখন ক্রিকেট ঈশ্বর হইছে। আম্পারিং খেলারই একটা অংশ। আম্পায়ারও মানুষ।
আর মানুষ মাত্রই ভুল করে। এটাই স্বাভাবিক। ফেরেশতারা ভুল করে না।
তাদের ভুল করার ক্ষমতা নেই। মানুষ ফেরেশতা না। মানুষ তাই ভুল করে।
কেউ কেউ জেনে শুনে ভুল করে। আবার কেউ কেউ না জেনে ভুল করে।  
ক্ষমতাও কাউকে কাউকে ভুল করায়।
দুর্বল সবলের দ্বারা চিরকালই অত্যাচারিত। ইহাই অলিখিত আইন।
এই আইন জানার জন্য গবেষণাপত্রের প্রয়োজন নেই। এটা সবাই জানে।।