একটি ভালোবাসার কবিতা লিখব বলে তেতাল্লিশ বছর ধরে দাঁড়িয়ে আছি,
মেঠো রাস্তার পাশে একা দাঁড়িয়ে থাকা দোতলার ভাঙা গ্রীল ধরে; অন্তহীন
অপেক্ষার সেই মাধবী ক্ষণ আজো আসেনি।
এই তেতাল্লিশ বছরে কতো সূর্য অস্ত গেলো, কতো সূর্য উদিত হলো
এই তেতাল্লিশ বছরে কতো পূর্ণিমা এলো, কতো চাঁদের অমাবস্যা গেলো
কেউ তার কোনো হিসাব রাখেনি! কেউ রাখেনি।


অথচ আমি কড়ায়-গণ্ডায় সে সব হিসাব করে রেখে দিয়েছি।  
এখনও আমার কাছে হিসাবের খাতাটা শিকেয়ে তোলা আছে। একটা পুরনো  
কাপড়ের মোড়কে ঢাকা।
যে পথ দিয়ে তুমি একদিন হেঁটে গিয়েছিলে
যে পথে একদিন তোমার ছায়া পড়েছিলো
সে পথ আমি চোখের কাজল বানিয়ে রেখে দিয়েছি!
সে পথের ধূলিকণা আমাকে দেখে স্যালুট দেয়। ভালোবাসার তারিফ করে।  
অথচ তুমি! রক্ত-মাংসের গড়া তুমি!!
সেই যে গেলে আর একবারও ফিরে এলে না! আমি কাঁদি। পথ সেও কাঁদে।


কাঁদতে কাঁদতে আশায় বুক বাঁধি । ভেঙে যাওয়া বুকের পাঁজর রোজই জোড়া দিই।
তবু শেষ হয় না অপেক্ষার কাল প্রহর।
তবু শুনতে পাই না তোমার ফিরে আসার পদধ্বনি।
পথ এবং আমি। আমি এবং পথ। দু’জনেই অপেক্ষার প্রহর গুনি। শেষ হয় না।  
বলতে পারো সে পথ আর কতো দীর্ঘ হবে? আর কতো------------!!  


কবিতা আমার কাছে বড়োই দুর্বোধ্য ছিলো। অথচ তোমার ভালোবাসার এমনই
শক্তি যে, সেই আমিই আজ কবি! সেই আমিই আজ কবিতা লিখি। লোকে পড়ে।
কেউ কেউ বাহবা দেয়। আবার কেউ কেউ তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করে। হাসির খোরাক হই।
আমি কর্ণপাত করি না।
আর কেউ না জানুক; তুমি তো জানো! কেন আমি আজ কবি?  
জানো,এই ভেবে মাঝে মাঝে বড়ো কষ্ট হয় বুকে;
আজ আমি কবিতা কিছুটা হলেও বুঝি; কেবল তোমাকে বুঝতে পারিনি!
বড়ো কষ্ট হয়--- বড়ো কষ্ট হয়----
তেতাল্লিশ বছরেও একটি ভালোবাসার কবিতা লিখতে পারিনি---!!