নারী ভুবনেশ্বরী, নারী দেশমাতা, নারী মাতা
নারী জায়া, নারী কন্যা, নারী ভগ্নী, নারী জাগতিক,  
নারীই শক্তি, নারীই মুক্তি, নারীই দৃঢ়তা
নারীই বিহ্বলতা, নারীই সহিষ্ণুতা, নারীই ক্ষমার প্রতীক ।


বহু যুগ, বহু বিবর্তন, বহু ইতিহাসের পাতায়  
প্রাচীন হতে মধ্য, মধ্য হতে বর্তমান,  
পরিবর্তনের বহু রচনায় নারী হয়েছে বিস্তৃত  
রচিত হয়েছে তাকে ঘিরে কত সংবিধান ।

কাত্যায়নের রচনায় উপনিষদের বর্ণনায়
বৈদিক কালে নারী ছিল পুরুষের সমানাধিকারী,
শৈশবে পিতা, যৌবনে স্বামী, বার্ধক্যে পুত্রের অধীনস্থ
সেও ছিল নারীর পরিবর্তিত ভূষণ-অলঙ্কারী ।


বিভিন্ন সময়ে সমৃদ্ধ হয়েছে গুণবতীদের কাহিনী
গার্গী, মৈত্রেয়ী, সাবিত্রী, খনা, লীলাবতী,  
রাজিয়া সুলতানা, জাহানারা, জিবুন্নিসা
তারাবাঈ, লক্ষ্মীবাঈ দেখিয়েছিল তাঁদের দুর্জয় গতি ।


মধ্যযুগ কালে অবনতি ঘটে নারীদের পরিস্থিতি
হয়ে পর্দাপ্রথা, সতীদাহপ্রথা, জওহরব্রত, দেবদাসী প্রথার বলি,  
শিকার হয় নারী, সমাজের প্রতিটি অঙ্গনে
অত্যাচার অনাচারে জর্জরিত, অন্ধকারাচ্ছন্ন গলি ।


বর্তমান কালে নারী জাতির সন্মানে আশা জাগিয়ে  
রাজা রামমোহন দেখালেন নতুন পথের দিশা,  
তাঁর নেতৃত্বে বিনাশ ঘটলো সতীদাহ প্রথা
হাহাকারের জগৎ থেকে ফিরে এল নারী, সরিয়ে অমানিশা ।


ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর শুরু করলেন জোরদার আন্দোলন
নারীজাতির শিক্ষার অধিকার তাঁর এক অনন্য অবদান,  
বাল্য-বিবাহ রদ হল, স্বীকৃত হল বিধবা-বিবাহ আইন  
মাথা উঁচু করে বাঁচতে শিখল, নারীদের কাছে তিনি মনীষী, মহান ।


এত পথ পরিক্রমা করেও নারীকে এই সমাজে অভিহিত হতে হয় কলঙ্কিনী
আজও তাকে হতে হয় লাঞ্ছিতা, ধর্ষিতা, নির্যাতিতা, বধুহত্যার শিকার
তারা আশা করে এর বিরুদ্ধে গর্জে উঠুক সমাজ, গড়ে উঠুক প্রতিবাদী সংগ্রাম
ফিরে আসুক তাদের নিজ মর্যাদা, অধিকারের সন্মান, ঘুচে যাক সামাজিক বিকার ।  

তবুও নারী এখন জননীর সাথে সাহসী যোদ্ধাও বটে
তবুও নারী এখন সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ
তবুও নারী এখন বিহ্বলতা কাটিয়ে বিচরণ করে নিজস্ব অস্তিত্বের তটে
তবুও নারী এখন বিশ্বজয়ী, সকল বিষয়ে সামঞ্জস্যপূর্ণ ।।


***