আদিলের মা
         জামাল ভড়
জ্যোৎস্না চেয়েছিলাম আমি , পেলাম অমানিশা
নিস্তরঙ্গ নদীতে নাওয়ে ভেসে ভেবেছিলাম চাঁদের দেশে যাব
কোমল হাতে নিয়েছিলাম দাঁড় , মাঝির ফাটাহাতে নামেই হাল
পর্যাপ্ত পরশের বদলে অপর্যাপ্ত উদাসীনতা
মূক অভিযোগ , অনীহা , তবু অদম্য প্রয়াস সমন্বয়ের
আকাশবাণীর শনিবারের চিঠিতে ভূয়সী প্রশংসা
প্রতিদিন পোস্টকার্ডে শুভেচ্ছার বন্যা --
দারিদ্র্যের শতছিন্ন আবরণে এগোতে পারিনি
এসব এখন অতীত , বাবার ইচ্ছেয় লোহালক্কড়ের সাথে
যে কোনদিন কবিতা বোঝেনি
যে কোনদিন ফুল ভালোবাসেনি
যে কোনদিন আমার কবরীতে দেয়নি মল্লিকা
যে কোনদিন প্রজাপতির ওড়া দেখেনি
যে কোনদিন শিশিরভেজা ঘাসে চলেনি
যে কোনদিন জ্যোৎস্নার প্লাবন দেখেনি
একগুচ্ছ রজনীগন্ধার চেয়ে বালি সিমেন্ট নিয়ে পড়ে থাকে
কোনদিন বিকেলে পার্কে নিয়ে যায়নি
দীঘা তো চাঁদ , কাশ্মীর মঙ্গলগ্রহ
তবু ভাগ্যিস আদিল এসে বসলো নৌকোয়
স্বপ্নের মতো আমার দিকে ফিরে বলে ,
রাজপুততের কী হলো মা তারপর
তার কোমল তুলতুলে হাতে আমাকে ধরে , কোলে বসে
তখন উথালপাতাল ঝড় থেমে আমার মনে দখিন হাওয়া
আমার দুগালে তখন নোনাজলের ধারা
নেগেটিভ ছবির রিল সরিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে
ঘুমের আড়ালে আমি দুঃখ ভুলে যাই
কাহিনি  এখানেই মরে যায় , তারপর ?