আমরা দাঁড়িয়ে আছি বারুদের স্তূপে
যে কোন সময়ে এক প্রচণ্ড বিস্ফোরনে
চূর্ণ বিচূর্ণ হতে যেতে পারি
বারুদের গন্ধে অভ্যস্ত হয়ে গেছি
শুধুমাত্র সূ্র্যের মধ্যাহ্ন তাপের সংস্পর্শের অপেক্ষায়
তবু আমরা প্রতিবাদমুখর নই
স্রোতে গা ভাসিয়ে দিয়ে আছি
মুখোশে ঢেকে আছে মুখ
নিত্য নতুন ফিতে কেটে উন্মোচন দেখেই ভুলে আছি
প্রতিশ্রুতির বন্যায় ভাসছি
কালোটাকা ফেরানোর প্রতিশ্রুতিতে ভুলেছিলাম
লাল দুহাজারি দেখে পনের লাখী স্বপ্নে ছিলাম বিভোর
নতুন নতুন কর্মপ্রতিশ্রুতির কথায় ভুলেছি
ভুলেছি বলেই স্বপ্নে ছিলাম মশগুল
তারপর যত দিন গেছে আশাহত হয়েছি ।


জনগণ প্রতিবাদী নয় কিংবা খোলসের মধ্যে
কেউ নেই যে এগিয়ে আসবে
কেউ নেই যে পাশে দাঁড়াবে
কেউ নেই যে চোখে আঙুল দিয়ে ত্রুটি দেখাবে
কেউ নেই যে সাহস দেবে
কেউ নেই যে প্রেমের অভয়বাণী শোনাবে
কেউ নেই যে দেবে সান্ত্বনা
কেউ নেই যে জোগাবে সাহস
অথচ দেশজুড়ে হাহাকার
সন্তানহারা মায়ের ক্রন্দন
স্বামীহারা বিধবার আর্তনাদ
ধর্ষিতা মেয়ের পিতার আকুতি
সৈনিকসন্তান বা সেনাস্বামীহারা পরিবারের অশান্তি
হায় আমার দেশবাসী
কোথায় সেই সোনালী যুগের দিনগুলো
কোথায় সেই ফসলের সবুজ বিপ্লব
কোথায় সেই ব্যাংক রাষ্টীয়করণের বৈপ্লবিক ঘোষণা
কোথায় সেই প্রতিবেশী দেশের রক্তচক্ষু ন্যাবারোগেভোগা
সেই ঝড় আজ নেই যে মানচিত্র ওলটপালট করে
এই বিশাল ভূখণ্ডে নির্ভয়ে ঘুরে বেড়ানো
আজ খোলস ছেড়ে যারাই বেরিয়ে এসেছে
যারাই প্রতিবাদে হতে গেছে মুখর
তারাই পেয়েছে দেশদ্রোহের তকমা
নিরপেক্ষ সংবাদমাধ্যম আজ আর নেই
নিজেদের বন্ধকী করে রেখেছে
মানুষের ন্যূনতম চাহিদার কথাও এরা বলে না
যারা সত্যিকারের মরদ তারাও যেন চুপসে গেছে
এখন আতঙ্কে কাটে দিন
এখন রাত মানেই বিভীষিকা
মন্দিরের ঘণ্টা , গির্জার বেল কিংবা মসজিদের আজান
আজ বেসুরো ঠেকে কানে
গুজরাট দিল্লির পরে উত্তর প্রদেশ
এখন শুধু এই বাংলা টিমটিম করে
আশার আলো দেখায়
এখানেই ব্যর্থ হানাদারদের ছোবল
এখানেই পরাহত তাদের স্বপ্ন
অথচ এই সেই আমাদের দেশ
যেখানে আমাদের পিতৃপুরুষ করতো বসবাস
আনত ঋজু শরীরের কাঠামো !
ক্ষিপ্র বিদ্যুৎ চমকের মতো একবার জ্বলে উঠুক
আমার দেশবাসী তারপর ফিরিয়ে আনুক
ভারতের ঐতিহ্যময় গৌরব ।