সেদিন ছিল রবিবার , কলেজে ছুটি
সাতই মার্চ উনিশশো একাত্তর
সবে তখন সতেরো পেরিয়েছি
আমাদের ঘরের পাশেই গনেশ কাকার চায়ের দোকান
দোকানে ছিল বেশ ভীড় , হাটের দিন
অন্য সময়ে এত ভীড় থাকে না
তাছাড়া এক ভাষণ অচেনা অদেখা এক নেতার
নেতা তো নয় যেন বাঘের বাচ্চা
কারো মুখে কথা নেই , সবার কানখাড়া
আমিও নেমে এলাম উপর থেকে
নীচের ঘরে বসেই শুনলাম সেই ভাষণ
আমার বাবার কানও ভাষণে
সমবেত লোকের কানও ভাষণে
আমার শ্রবণ ভাষণে
কী জ্বালাময়ী সে-বক্তৃতা
তেজস্বী জ্বালাময়ী সে-বক্তৃতা
বক্তৃতা তো নয় যেন গর্জন
গর্জন তো নয় যেন পিতার আশ্বাস
প্রতিরোধের হাতিয়ার
সংগ্রামের হাতিয়ার
সমবেত জনতার উচ্ছ্বাস
ভিন দেশের যুবক হলেও সে-ভাষণে
টগবগ করে আমার তরুণ রক্ত
আমার অজান্তেই হাত মুষ্টিবদ্ধ , করে নিশপিশ
ভাষণে তখন আমি আবিষ্ট
ভাষণে আমি অভিভূত , আমি আপ্লুত
দেশকে ভালোবাসার মন্ত্র
জানি আমাদের সংগ্রাম নয়
যে দেশে যাইনি কোনদিন
যে দেশ দেখিনি কোনদিন
কেন জানিনে তবু বুকে আসে
অঙ্গীকারের শপথ সহমর্মিতার শপথ
যখন শুনি "এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম"
তখন হৃদয়ে সহযোগিতার অঙ্গীকার
মনের অজান্তেই বেরিয়ে আসে "জয় বাংলা" ।