এই যে বিশাল কলাবাগান
ঠিক এখানেই ছিল মুখুজ্জেদের জমিদারবাড়ি
সামনে ছিল বিশাল এক ফটক
ফটকের উপরে দুপাশে দুটি সিংহমূর্তি
চোখ রাখতো কে ঢুকছে না ঢুকছে !
সারাদিন সিংহ দুটি চুপচাপ শুয়ে থাকতো
আর রাত গভীর হলে শিকারে বেরিয়ে
নিজেদের ক্ষিধে মেটাতো ।
ফটক দিয়ে ভিতরে গেলেই পূজামণ্ডপ
চৈত্রসংক্রান্তিতে এর চত্বরেই চড়কের মেলা বসতো ।
জমিদারের দাপট ছিল ঐ সিংহ দুটির মতো
তবুও ছোটবাবু চল্লিশের দশকের শেষদিকে
একপাল হায়েনার আক্রমণে শেষ
তারপর লালপাগড়ি এসে বনের সব হিংস্র পশুদের
বনছাড়া করলেও বড়বাবু সেই সময়ে বালিগঞ্জে
বাগানবাড়ি করে চলে যান আর নায়েব গোমস্তা
বকলমে চালাতো জমিদারি ।
পঞ্চাশের দশকে জমিদারি উচ্ছেদ হলে
আর সেই জৌলুস ছিল না জমিদারবাড়ির ;
আস্তে আস্তে চুন পলেতাস্তারা খসে পড়ে
বাড়িটার কোন গুরুত্ব ছিল না
সিংহ দুটি নখদন্তহীন হয়ে পড়ে
তবুও আশির দশকে শেষদিকে
হাতুড়ির দল প্রকাশ্য দিনের আলোয়
ধূলিসাৎ করে সেই ইটপাটকেল দিয়ে
চৌদ্দটা গ্রামের রাস্তায় বিছিয়ে দেয়
আর এখানেই সেই কলাবাগান ।