বেলিয়াঘাটা ব্রিজ স্টেশনের উপর দিয়ে রাতের শেষ ট্রেনের গমগম আওয়াজে সাকিনার ছোট মেয়েটা ঘুম থেকে উঠে পড়ে , সবে তাকে ঘুম পাড়িয়ে কলার বাসনায় ঘেরা জায়গায় প্রয়োজন মেটাতে গেছে , পড়িমরি করে ছুটে আবার তার মুখে মাই গুঁজে শান্ত করে ।
মরদটা ঘুমের ভান করে মটকা মেরে পড়ে আছে ,
তার কাছে না গেলে ফুলে গোঁসা হবে , পুরুষগুলোই বুঝি এমন স্বভাবের , বুঝতে চায় না সারাদিন কী ধকল না যায় সংসারের পিছনে । ফলতি গ্রামের অনেকের মতো
সাকিনার জীবন কাটে , এখানে শাঁসালো বলতে তো হাতে গোনা দু' তিনটে পরিবার ,
বাকি সবার ঐ এক রকম হাঁস মুরগি ছাগল পোষা , মাছধরা
কদমগাছি থেকে আনা কামসেলাই ; একটা জামায়
ফুলের কাজ করলে হাজার দেড়েক টাকা মেলে
শত চেষ্টা করেও মাসে তো দুটোর বেশি তুলতে পারেনা । গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ দ্বিতীয় ট্রেন ধরে বারাসাতে যায় , কাজ মিললে হাসিমুখে বাড়ি ফেরে, নইলে হাঁড়িমুখ ; মরা বিদ্যাধরীতে এখন এত রাতে কোন নৌকা চলাচল করে না ;
নিশাচর পাখির ডাক কেবল নিস্তব্ধতা ভাঙ্গে
চাঁদের আলোয় মরা বিদ্যাধরী আর সাকিনা ভেসে চলে।