প্রতিদিন মর্নিং ওয়াক সেরে তিন বুড়ো আসে পার্কে
খানিক শারীরিক কসরত করে বসে পড়ে ঐ বেঞ্চটায়
তারপর শুরু করে যে যার কথা ; মাঝেমাঝে এককথার
পুনরাবৃত্তি হয় বৈ কী তবু আগ্রহের সাথে শোনে
আবার ফোড়নও কাটে
সত্তর ছুঁই ছুঁই প্রথম বুড়ো : শালার মারণব্যাধি না গেলে
বেড়াতে সাহস হয় না ; বুড়িটা বড় তিতিবিরক্ত
হয়ে গেছে , বেড়াতে না নিয়ে যাওয়া অবধি আগের
মেজাজে ফিরে আসবে না ; একবার গেলেই এক বছর
জাবর কাটতে থাকে । সেই স্কুলটিসকুলের দিনগুলো সব ভুলে গেছি এখন ।
ছেলেমেয়েরা যে যার সংসার নিয়েই আছে , আমরা দিব্যি আছি দুজনে ।
তবে মাঝেমধ্যে বুড়িটাকে মেয়ে ডেকে পাঠায় এই যা !


চার মাস পরে রিটায়ার দ্বিতীয় বুড়ো : দিব্যি আছ ভাই
আমার তো মাত্র চার মাস , পেনশনের কাগজপত্র এখনো ডিআই অফিসের
টেবিল ছাড়েনি , মাটি কামড়ে পড়ে আছে জন্মভিটের মতো ;
ছেলেমেয়েরা এখনো স্কুল কলেজের গণ্ডি পেরোয়নি ।
কী আছে কপালে কে জানে ! বৌটাকেও ধরেছে কিডনির ব্যামো !
আমিও তো ঐ ব্যাধিতে ভুগতে ভুগতে ফিরে এলাম
বছরে দুবার ভেলোরে ছোটা ভাল্লাগে না ছাই
বড় ছেলেটাও যদি লেখাপড়া শেষ করে একটা
চাকরি টাকরি পেত !


তেষট্টি বলে, তোমাদের তো ভাই বৌ ছেলেমেয়ে কাছে আছে ।
আমার বৌটাও গেল আকাশে , একমাত্র মেয়ে
চলে গেল স্টেটসে , দেশে ফেরার নাম করে না
গ্রিন কার্ড পেয়ে গেছে তাই হয়তো আর ফিরবে না
একটা নাতিও হয়েছে বছর তিনেক , হোয়াটস্ এপে
যা ছবি-টবি দেখি , কথাও হয় মাঝেসাজে । বাংলাটা
বলতে পারে না বলে ড্যাডু । কাজের মাসীর রান্নাকরা
ঠাণ্ডা খাবার খেতে হয় । হবে নাই কেন সাতসকালে
টিফিন ও রান্না সেরে চলে যায় ‌। সন্ধে নামলেই
রুটি সবজি করে যায় । অত তাড়াতাড়ি তো
খাওয়া যায় না । মাঝেমধ্যে শরীরগতিক ঠিক থাকলে
গরম করে নিই নইলে হিম ভাত গিলতে হয় ‌।