এদেশে জন্ম আমার
এদেশের মাটি আমার সোনা
শুনেছি বাপদাদার মুখে
মিলেমিশে ছিল সুখে
দুঃখের বান ডেকেছে পঞ্চাশে
বুভুক্ষু মানুষের দল
ফ্যানের জন্য ঘোরে মানুষের দ্বারে দ্বারে
এদেশেই সন্যাসী আন্দোলন
এদেশেই ফকিরের আন্দোলন
এদেশেই সাঁওতাল বিদ্রোহ
কত পির মুর্শিদ একসাথে মিলিয়ে কাঁধে কাঁধ
ব্রিটিশের সাথে লড়ে
লাদাখ থেকে কন্যা কুমারিকা
আইজল থেকে ভুজ
একসুরে ছিল গাঁথা ।
দুর্ভিক্ষের এই দেশ
মন্বন্তরের এই দেশ
কভু কলহের এই দেশ
তবু শান্তি পেয়েছে লোকে
কখনো রক্তচক্ষু শাসক
জাতের নামে বজ্জাতি
তবুও দুর্ভেদ্য প্রাচীর
প্রতিবাদ আসে বারেবারে
যেখানে মৃত্যু শঙ্কিত জেনেও
মাটি কামড়ে পড়ে থাকে আবালবৃদ্ধবনিতা
খরতাপে কিংবা বানভাসিতে
হেঁটেছে পাশাপাশি
ঠাঁই পেয়েছে একই ত্রাণশিবিরে
করিমের আধখাওয়া বিড়ি টেনেছে সুবল
একই গর্তে লুকিয়ে বাঁচিয়েছে প্রাণ
গঙ্গার জলে ভেসে গেছে কত শত লাশ
অতিমারির নিঠুর কালে ।
কত শত গৃহছাড়া এদেশে পেয়েছে ঠাঁই
মিলেমিশে খেয়েছে একই গাছের ফল
প্রাণ বাঁচিয়েছে একই নলকূপের জল
দীনবন্ধুর লাঙল নিয়ে আবুল চষেছে জমি
বরকতের গরুরগাড়ি ধার করে রতিকান্ত
বিচালি নিয়ে গেছে শহরে
গফুরের মেয়ের বিয়েতে দিয়েছে টাকা গোপাল ।
আজ শাসকের ধামাধরা পেয়াদা
রক্তবর্ণ চক্ষে ভীতি সঞ্চার করে বক্ষে
নিরীহ মানুষের উদ্বায়ী প্রাণ
ভেসে যায় সুদূর নীলিমায়
আশঙ্কায় কাটায় দিন
কোথায়ও যাওয়ার নেই স্থান
মাটি আঁকড়ে পড়ে থাকে
তারা জানে একদিন কেটে যাবে দুর্যোগ
আবার আগের মতো পাশাপাশি থেকে
গেয়ে যাবে জয়গান
এদেশ সবার প্রাণ
সোনার মতো খাঁটি এদেশ
উর্বর ভূমির মাটি এদেশে ।