শুভ জন্মদিন কবি !
বিরহ এবং মিলন - প্রেমের নিত্য খেলা l স্বল্প বিরহ প্রেমের উষ্ণতাকে বাড়িয়ে দেয় l আবার দীর্ঘ, অতি দীর্ঘ বিরহ প্রেমকে নাশ করে l এই বিরহ ও প্রেম বিষয়েই কবি সাজ্জাদ সুবর্ণ "চৈত্রের কাছে আমরা দিবো ধরা" কবিতাটি রচনা করেছেন l
বিরহ অতি দীর্ঘ হয়ে পাছে প্রেমকে নাশ করে তার পূর্বেই কয়েক বছরের বিরহ অন্তে কবিতার প্রেমিক কোনো এক চৈত্র মাসে তার প্রিয়ার সঙ্গে মিলিত হবেন বলে স্থির করেছেন l পরস্পরের কাছে ধরা দিবেন বলে সংকল্প করেছেন l
বিরহের অনেক কারণ থাকে l কখনো থাকে বাধ্যবাধকতা l কখনো কোনো এক পক্ষের ভুল l আবার কখনো শুধুই ভুল বুঝাবুঝি l বিরহকালীন উভয়পক্ষেই থাকে প্রচুর মান অভিমান l থাকে অভিযোগের পাহাড় l এই সবকিছুকে অতিক্রম করে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করা বিষয়টি সহজ হয় না l কোনো এক পক্ষকে উদ্যোগ নিতে হয় l কিন্তু মাঝে এসে দাঁড়ায়  স্বাভিমান এর প্রাচীর l কোনো পক্ষই নত হতে রাজি নন l এমতাবস্থায় বিরহ দীর্ঘতর হয়ে প্রেম ভালবাসার সম্পর্কের বিনাশের সম্ভাবনা l
কবিতায় বর্ণিত প্রেমিক এতটা স্বাভিমানী নন l বিরহ খুব দীর্ঘ হবার পূর্বেই তাই তিনি তাঁর প্রিয়ার সঙ্গে মিলিত হবার সঙ্কল্প করেছেন l সময় বেছে নিয়েছেন বছর শেষের চৈত্র মাসকে l
প্রেম সম্পর্কের এমনই বৈশিষ্ট্য, ভেতরে যতই মান অভিমান থাকুক, দীর্ঘ বিরহের পর দুই প্রেমী যখন মিলিত হন, চোখের জলে সব মান অভিমান, রাগ দ্বেষ ধুয়ে যায় l ভালোবাসার স্পর্শে, পরস্পরের প্রতি আত্মসমর্পণে এতদিনকার বিচ্ছেদ বেদনা দূর হয়ে যায় l
পুনর্মিলনকে মধুরতর করে চৈত্র মাসের নৈসর্গিক দৃশ্য l আকাশে জ্বলে ওঠে উগ্র প্রেমের প্রতীক চিত্রা নক্ষত্র l চৈত্রের রাতের আকাশ তারায় তারায় ভরে উঠে প্রেমের আবহ সৃষ্টি করে l প্রেমিক এবং তাঁর প্রিয়া নিসর্গের সঙ্গে একাত্ম হয়ে ওঠেন l চৈত্রের দুপুরে ওড়া ধুলোর সঙ্গে তাঁদের পরস্পরের প্রতি পুষে রাখা সব অভিযোগ শিমুল তুলার মতো উড়ে মিলিয়ে যায় l
চৈত্রের পূর্ণিমার রোমান্টিক আবহে প্রেমিক এবং তাঁর প্রিয়া পরস্পরের মনের গোপন ইচ্ছা, না বলা মনের কথা বুঝে নেন l দীর্ঘ বিরহের ক্লান্তি দূর হয় মধুর মিলনে l আকাশের তারারাশি যেন হলুদ এবং সোনালী ঝাড়বাতি মেলে ধরে প্রেমিকযুগলের প্রণয়কালে পাহারায় নিয়োজিত থাকে l


কবিকে জানাই আন্তরিক শুভকামনা !!