সভ্যতার ইতিহাস দীর্ঘ l তার চলার পথ বন্ধুুর l নব নব আবিস্কারে পুষ্ট তার ভাণ্ডার l সেই ইতিহাস কখনও আবার কলঙ্কিত মানবতার অপমানে l একই মানুষ কখনো দেবোপম, কখনো শয়তানের প্রতিমূর্তি l
সভ্যতার দীর্ঘ চলার পথে গতি কখনো দ্রুত l যুগান্তকারী কোনো আবিষ্কার এক ধাক্কায় যুগকে অনেকটা এগিয়ে নিয়ে যায় l বৈপ্লবিক পরিবর্তনের পথ ধরে মানবসভ্যতা আদিম গুহামানবের যুগ থেকে বর্তমান তথ্য প্রযুক্তির যুগে এসে পৌঁছয় l
আবার কখনো তার চলার গতি শ্লথ l নতুন দিশার অভাবে হাঁটি হাঁটি পা পা l তখন বিবর্তনের পথ ধরে ধীরে ধীরে দেশ কাল সমাজ এগোয় তার নিজ পথে l
এর মাঝে আসে অচলায়তন l শতাব্দীর পর শতাব্দী অন্ধকারময় যুগ l মানুষের মেধা, কল্পনা সতেজতা হারায় l গতি যখন রুদ্ধ হয়, তখন নানা সংস্কার, কুসংস্কার সভ্যতার গলা  টিপে ধরে l পচাগলা নিয়ম কানুন মানুষের বেঁচে থাকাকে দুর্বিষহ করে তোলে l
মানবসভ্যতার এরকম অচলায়তন সময়ে "নব চেতনার ভাবনাগুলো" কবিতায় কবি চিত্ত রঞ্জন সরকার মানুষের নব নব উদ্ভাবনী ভাবনাগুলিকে আহ্বান করেছেন l সেই যুগান্তকারী, মানবকল্যাণকারী ভাবনা একটি নির্দিষ্ট গন্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে দেশে দেশে ছড়িয়ে পড়ুক, এই সভ্যতাকে অচলায়তনের নাগপাশ থেকে মুক্ত করুক, প্রগতির পথে, সমৃদ্ধির পথে তাকে চালিত করুক - এটাই কবির প্রার্থণা l
অন্ধকার যুগের সমাপ্তি হোক l জ্ঞানের প্রকাশ নতুন শক্তি যোগাক l হৃদয় প্রসারিত হোক l আলোর দীপ্তি, নতুন জ্ঞানের প্রবাহ ঝোড়ো হাওয়ায় উড়িয়ে নিয়ে যাক অচলায়তনের অন্ধকার l নব চেতনায় জেগে উঠুক মানবসমাজ l জ্ঞানের প্রকাশ দীপ্ত করবে সকলকে l এই নতুন চেতনায় সৃজনশীল সৃষ্টির জগতে জোয়ার আসবে l পচা গলা ভেসে গিয়ে মুক্তির আস্বাদনের আনন্দে ভাসবে সবাই l
বিশ্বে নবজাগরণ হবে l সুর তাল ছন্দে জগৎ নেচে উঠবে l ক্ষুব্ধ, বিক্ষুব্ধ জনগণ শান্তির পরশ পাবে l প্রেম পাবে প্রাণস্পর্শী নতুন পরিভাষা l
ছন্দময় সুন্দর আশাবাদী কবিতাটির জন্য কবি চিত্তরঞ্জন সরকার মহাশয়কে জানাই অভিনন্দন l