মানুষ সামান্য বেঁচে থাকায় সন্তুষ্ট নয় l খাদ্য বস্ত্র বাসস্থান - জীবনের এই প্রাথমিক প্রয়োজন মিটে গেলেই সে তার জীবন যাপনকে সার্থক মনে করে না l সে স্বপ্ন বিলাসী l স্বপ্নের ফেরিওয়ালা l সুরের সন্ধানী l মিষ্টি বাঁশির সুরের আবহে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয় সে l তার স্বপ্নগুলো ডানা মেলে উড়তে শুরু করে l জীবনভর যে স্বপ্নকে সে মনের মধ্যে লালন করে এসেছে সেই অসমাপ্ত স্বপ্ন উড়ান দেয় l বহুকালের আকাঙ্খিত সেই উড়ান l মনকে উড়িয়ে নিয়ে যায় বহু দূর দূর দেশে, যেখানে পরীরা খেলা করে l  
কল্পনার ডানায় ভর দিয়ে মানুষ তার দৈনন্দিন বেঁচে থাকার নিত্য সংগ্রামের জগৎ থেকে দূরে, বহু দূরে আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে এক স্বপ্নের জগৎ  রচনা করে l সেখানে কবিকল্পনায় নয়নের দীঘিতে পদ্মফুল ফোটে l সৃজনশীলতার উন্মাদনায় গভীর গহন রাতেও চোখে ঘুম আসে না l প্রজ্জ্বলিত দীপের টিমটিমে আলোতে মনের মধ্যে সংরক্ষিত অসম্পূর্ণ ভাবনাগুলি পূর্ণতার পথে যাত্রা শুরু করে l
এখানেই শুরু হয় বাস্তবের সঙ্গে সংঘাত l কবির কল্পনায় রচিত জগতে স্বপ্নের এই উড়ান বাস্তব জগতের অনুমতি পায় না l বেরসিক মানুষজন কবির এই অস্বাভাবিক স্বপ্নতত্বের পাঠোদ্ধার করতে পারেন না l  হয়তো গভীর রাতে কবির এই অস্বাভাবিক আচরণ অভিভাবক শ্রেণীর কাছে বিসদৃশ থেকে l হয়তো মৃদু ধমক জোটে কবির l আজন্ম লালিত অপার্থিব স্বপ্নের পূরণের পথে এই পার্থিব বাধা কবিকে বিষন্ন করে l অশ্রুজলে ভাসেন তিনি l আফশোস করেও কোনো সান্ত্বনা মেলে না l দ্বিধায়, দ্বন্দ্বে পড়েন l স্বপ্নের পথে তাঁর এই উড়ানের যৌক্তিকতা নিয়ে, তার ঔচিত্য নিয়ে নিজের মনের মধ্যেই সংশয় দেখা দেয় l মনে ইতস্তত ভাব আসে l এই বাধাদানকে তিনি মেনে নিতে পারেন না l আবার এই বাধাকে পুরোপুরি অস্বীকার করার মতো শক্তিও পান না l মনের এই দোদুল্যমানতা কবিকে আচ্ছন্ন করে রাখে l


"অসমাপ্ত স্বপ্নের উড়ান" কবিতার কবি এম ওয়াসিক আলিকে সুন্দর একটি আবেগঘন কবিতা উপহার দেবার জন্য অভিনন্দন জানাই l