শুভ জন্মদিন কবি !
পৃথিবীতে মানুষ সত্য এবং ভ্রম উভয়কেই প্রত্যক্ষ করে l 'প্রতীক্ষা' রচনাটিতে কবি তানভীর আহমাদ সিদ্দিকী ভ্রমের ওপর সত্যের জয়কে প্রতিষ্ঠিত করেছেন l
জ্ঞানী মানুষ সত্যকে চিনতে পারেন এবং সত্যের পথকে অনুসরণ করেন l অনেক মানুষ আবার ভ্রমের পথে চলেন l তাঁরা সজ্ঞানে বা অজ্ঞানে মিথ্যাকেই সত্য বলে জ্ঞান করেন l
কিন্তু সত্য সত্যই থাকে এবং মিথ্যা, মিথ্যা l মিথ্যার পথে চলে মানুষ অনেক অন্যায় কাজ করে ফেলেন l অহং গ্রাস করে ফেলে তাঁদের সমগ্র সত্তাকে l তাঁরা মনে করেন, সবকিছু তাঁদের বশীভূত l সময় তাঁদের বশীভূত l যেভাবে তাঁরা জগতকে দেখেন, তাঁদের ধারণা জগত সেরকমই এবং বাকি সকল মানুষ সেভাবে জগতটাকে দেখুন এটাই তাঁদের চাওয়া l কিন্তু সত্য কারো বশীভূত নয় l সময় কারো দ্বারা নিয়ন্ত্রিত নয় l সত্য তার উপাসকদের দ্বারা যুগে যুগে প্রকাশিত হয় l সত্যের এই প্রকাশকে কেউ রোধ করতে পারে না l একজন সত্যের সাধককে হত্যা করলে অন্য শত শত সাধকের জন্ম হয় l গ্যালিলিওকে হত্যা করে সত্যের আগমনকে রোধ করা যায় নি l যীশুকে ক্রুশবিদ্ধ করে সময়কে সেই যুগে বেঁধে রাখা যায় নি l
সময়ের নিজস্ব গতি আছে l এই গতি কেউ রোধ করতে পারে না l জাগতিক কিছু বিষয়কে নিজের নিয়ন্ত্রণে এনে, তার ওপর প্রবল আধিপত্য বিস্তার করে কিছু মানুষের এই ভ্রম হতে পারে যে জগতকে তাঁরা বশীভূত করে ফেলেছেন, সময়কে তাঁরা নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেছেন l তাঁদের সীমিত পরিসরকে তাঁরা জগত বলে ভ্রম করেন এবং এই ভ্রমে থাকেন যে জগত চিরকাল তাঁদের ইচ্ছামতো চলবে l কিন্তু সময় তাঁর নিজের খেলা দেখায় l সময়কালে মিথ্যার প্রাসাদ ভেঙে গুঁড়িয়ে যায় এবং সত্যের প্রতিষ্ঠা হয় l সময় এবং সত্য এমন দুটি ধ্রুবক যা সমস্ত রকমের ভ্রম থেকে মুক্ত এবং স্বয়ংচালিত l কখনো সাময়িকভাবে সত্যকে, সময়কে দাবিয়ে রাখা গেছে বলে কিছু মানুষ ভ্রমিত হতে পারে, কিন্তু সেই ভ্রমের বিনাশ অনিবার্য l এরকম প্রতিটি ভ্রমের বিনাশে সত্যের নবজন্ম হয় এবং তার শ্বাশ্বত রূপ প্রতিষ্ঠা পায় l মানবজাতি সত্যের সেই সত্য রূপ দেখার প্রতীক্ষাতেই বেঁচে থাকে l


কবিকে জানাই শুভকামনা l