1. চারজন যোগগুরু :


চারজন যোগগুরু ভোরবেলা মাঠে যায়
এত আগে মাঠে এসে কি যে করে নিরুপায় l
সময় তো সেই ছ'টা তার আগে বসা নয়
ছবি তুলে বারেবারে সময়ের অপচয় l
তবু ছোট তিরপলে বসে পড়ে চারজন
প্রাণায়াম এটা সেটা গল্পের আয়োজন l
বেলা বাড়ে একে একে দেখা দেন বাকি সব
সারা মাঠ জুড়ে দেখো শুরু হয় কলরব l
কেউ হাঁটে কেউ খেলে কেউ ছোঁড়ে হাত পা
কসরত কতো চলে গরম হবেই গা l
এসে পড়ে তিরপল পেতে নিয়ে বসে সব
শুরু হয় যোগব্যাম মাঠ জুড়ে ধপ ধপ l


একজন ঘরে শুয়ে পোষ্ট দেয় তাই রে
কীর্তনে গেলাম না শিবিরেও নাই রে l


2. টাকাগুলো দে রে তোরা :


ঘড়ি করে টিক টিক বাজে ঠিক ছ'য়টা
টাউন ক্লাব মাঠে দেখি জোটে দল কয়টা l
ছেলে বুড়ো প্রৌঢ় কেউ বাদ থাকে না
মেয়েরাও এসে জোটে মেঘ রোদ মানে না l
মাঠ জুড়ে শুরু হয় কতো সব কসরত
হাঁটাহাঁটি খেলা আর ডন ও বৈঠক l


এক কোণে সেই মাঠে তিরপল বিছিয়ে
জনা কুড়ি বসে পড়ে ওঁম বলে চেঁচিয়ে l
প্রদীপদা যোগগুরু ঠিক ঠিক কায়দায়
একে একে পিটি যোগ প্রাণায়াম হয়ে যায় l
যারা শেখে তাঁরা সব পুরাতন নতুনে
কেউ পাকা কেউ কাঁচা বলে আর পারি নে l


কেউ করে চল্লিশ কেউ দশে থেমে যান  
প্রদীপদা যোগগুরু কমবেশি সামলান l
শরীরটা বুঝে করো হাড়ে বেশি চাপ নয়
প্র্যাকটিসে প্র্যাকটিসে হবে সব নিশ্চয় l
হাসি মজা শাসনে সকালটা কেটে যায়
দিনে দিনে প্রতিদিনে মেদ সব ঝরে যায় l  


খাতা নিয়ে বেলা শেষে গুরু ক'ন ঝেঁঝিয়ে
টাকাগুলো দে রে তোরা মাস গেছে পেরিয়ে l


3. পায়েলদি :


যোগ ক্লাসে সকলের আছে এক প্রিয়জন
পায়েলদি নাম তার সমস্যা তাঁর ওজন l
রোজ রোজ ঘি খেয়ে ওজনটা বেড়ে যায়
এত করে ব্যায়াম তবু পায়েলদি নিরুপায় l
মাঠে রোজ কথা হয় যন্ত্রটা আনবার
প্রদীপদা কথা দেন আনবেন রবিবার l
রবিবার এলো যেই চড়লেন একে একে
এ কি কথা ওজনটা আসে শুধু অর্ধেকে l
পায়েলদি আশি কেজি চল্লিশ মাপ ওঠে
ব্যাটারির দম নেই সমস্বরে রায় ফোটে l
পরদিন ফের চান ওজনটা জানতে
প্রদীপদা ছুটে যান ব্যাটারিটা আনতে l
তবু মাঠে যন্ত্রটা এলোমেলো মাপ দেয়
চৌকিটা পাতো মাঠে তপনদা রায় দেয় l
চৌকিতে চেপে মতি ঠিক হয় যন্ত্রের
ঠিক ঠিক মাপ দেয় দেহ বৃহদন্ত্রের l
আশি প্লাস পায়েলদি ওজনে সবার বেশি
ব্যায়াম যোগ করে যান তাই তিনি দিবানিশি l


প্রদীপদা মাঝে মাঝে একে তাঁকে ডেকে নেন  
সেইদিন তিনি নেতা তাঁর মতো চাপ দেন l  
পায়েলদি খুব কড়া চলে শুধু ঘামে না
আরেক তপনদা শুরু হলে থামে না l
এইভাবে রোজ রোজ নিজে খেটে খাটিয়ে
পায়েলদি রোগা হন শিবিরকে মাতিয়ে l


4. প্রাপ্তি :


সঞ্জীবনী যোগ শিবিরে রোজ সকালে মাঠে
ঘন্টা দুয়েক বলবো কি ভাই বড্ড মজায় কাটে l
শহরকেন্দ্র টাউনক্লাবে একটি কোণে বসে
জনা কুড়ি যোগের সাধক আসন করেন কষে l
বৃষ্টি বা রোদ কেউ মানে না সকাল হলেই মাঠে
ত্রিপল পেতে বসে পড়েন যে যার নিজের ঠাটে l


বৃষ্টি কথায় পড়লো মনে সবার তপন দাদা
বৌদি নিয়ে ঘুরতে গেলেন পাহাড় যেথায় সাদা l
সেখান থেকে ফেরার সময় শিবির মাথায় রেখে
ছাতা নিলেন সবার জন্য ভালোবাসায় মেখে l
শিবির শেষে সবার হাতে দিলেন উপহারে
তপনদা ও শম্পা বৌদি ! বৃষ্টি যেন হারে l


কিন্তু সেদিন শিবিরমাঝে ছিলেন নাকো যাঁরা
প্রথমে তো মনে হলো বাদই গেলেন তাঁরা l
কিন্তু এ ভ্রম গেলো কেটে সঠিক পরের দিনে
তাঁরাও দেখি ছাতা পেলেন বেঁধে গেলেন ঋণে l
এ ঋণ হলো ভালোবাসার এবং কৃতজ্ঞতার
বহির্দেশে ঘোরেন তবু শিবির মনে রাখার l


নিয়মিত আসেন যাঁরা রোজ সকালে যোগে
উপহারে ধন্য তাঁরা প্রাপ্তি উপভোগে l


5. সূর্যনমস্কার :


সঞ্জীবনী যোগ শিবিরে অনেক আসন মাঝে
সূর্য নমস্কারের আসন লাগলো ভীষণ কাজে l
প্রদীপ দাদা তপন দাদা এবং দীপু দাদা
নিত্যদিনই সংখ্যা বাড়ান রেকর্ড ভেঙে কাদা l
লিপিকাদি দারুণ তিনি সমান তালে চলেন
বাকি সবাই যে যার মতো নিত্য সিলিং খোলেন l
এমন মজার আসন রে ভাই বারো আসন যোগে  
শরীর নীরোগ প্রজ্ঞা বল ও তেজের সহযোগে l
শৃঙ্খলাতে বাঁধা আসন একের পর এক আসে
সটান থেকে শুরু হয়ে নানান দিকে ভাসে l
নানান রকম অবস্থানে শ্বাসের নিয়ম মেনে
দিনে দিনে চর্চা করে নেন সকলে জেনে l


(প্রথম হলো প্রনামাসন ওঁম মিত্রায় নমো
হস্তউত্থানাসন পরে ওঁম রবইয়ে নমো
আসে হস্তপাদাসনে ওঁম সূর্যায় নমো
একপাদপ্রসারণ ওঁম ভানবে নমো
পাঁচে থাকে পর্বতাসন ওঁম খগায় নমো
অষ্ট অঙ্গ নমস্কারে ওঁম পুষ্ণে নমো
ভুজঙ্গাসন সাত নম্বরে ওঁম হিরণ্যগর্ভায় নমো
অধোমুখশ্বানাসন ওঁম মরিচয়ে নমো
অশ্বসঞ্চালনাসন ওঁম আদিত্যায় নমো  
দশে আসে উত্থানাসন ওঁম সবিত্রে নমো
হস্তউত্থানাসন পরে ওঁম আর্কায় নমো
সবার শেষে প্রণামাসন ওঁম ভাস্করায় নমো l)


বারো আসন মিলেজুলে গোটা শরীর চর্চা  
নিয়মিত করলে পরে বাঁচে অনেক খরচা l
সামনে পিছে ওপর নিচে শরীর যেন ওড়ে
শ্বাসের আদান প্রদান চলে গোটা বক্ষ জুড়ে l
সূর্য হলেন আত্মা সম সকল জীবের পিতা
আসন দ্বারা তাঁর প্রনামে আত্ম সমর্পিতা  l


সঞ্জীবনী যোগ শিবিরে প্রতি প্রভাত বেলায়
নীরোগ শরীর পুণ্য আত্মা পরমাত্মায় মেলায় l


6. বৃষ্টিরানী :


বৃষ্টিরানীর কঠিন চালে
যোগশিশুরা পথ হারালে l  
রবিবারে ঘরেই ঘুরি  
ঘরে বসেই হাত পা ছুঁড়ি l
নিজেই গুরু নিজেই চেলা
যোগকে নয় তো অবহেলা l
পিটি আসন যোগ ব্যায়ামে
সবার শেষে প্রাণায়ামে l
জোস্ যদিও বেজায় কম
একলা ওমের নেই সে দম l
বৃষ্টি শিবির করলো মাটি
ঘরে নিজের আসন পাতি l
একলা ঘরে যোগের ক্লাসে
নীরস চৰ্চা ক্লান্তি আসে l
মাথার ওপর আচ্ছাদনের
এখন বড়ো প্রয়োজনের l


7. বামে ও ডাইনে :


সকাল হলেই আসো যোগ ব্যায়াম শিবিরে
সবকিছু ভুলে গিয়ে যোগে মন নিবিড়ে l
হাত তোলো ওপরে বামদিকে ডাইনে
মাস গেলে ভুলো নাকো দিতে নিজ মাইনে l
শরীরটা ভাঁজ করো পেছনে ও সামনে
কোমড়টা একইভাবে বামে ও ডাইনে l
কখনো মালাইচাকি কব্জি বা পা যুগল
ঘুরে যায় সবদিকে যতো সব মাংসল l
যৌগিক ব্যায়ামে পাই, নেতা সে তপনদা
সূর্য নমস্কারে দায় নেন দীপুদা l
একজন জলে তো আর জন ডাঙ্গাতে
কুমীর ও বাঘে মিলে লাগে ভূত ভাগাতে l
ভূত থাকে শরীরে ব্যায়ামে ব্যায়ামে জব্দ
পিটি যোগ আসনের কোটা যা বরাদ্দ,
প্রদীপদা ধরে ধরে সিলেবাস সামলান
প্রকাশদা গুরুদেব হাস্যাসনে অম্লান l
নিহার ও ইন্দ্র গলায় গলায় ভাব
তবু করে খুনসুটি যেহেতু তা স্বভাব
একজন দেরি করে আরজন সামলায়
জায়গা রাখতে গিয়ে জুড়ে যায় মামলায় l
আছে কিছু দিদিভাই নরমে ও গরমে
কেউ মাঝে থেমে যায় কেউ যায় চরমে l


8. শিথিল বাঁধন :


বামে ও ডাইনে
ব্যায়ামের আইনে
ঘুরে চলে হাত ও পা
ঘুরে সারা দেহ
মাঠ জুড়ে কোলাহল
বাদ নেই কেহ l


দু ঘন্টা ধরে
এক এক করে
ভোর থেকে শুরু হয়ে
টানা চলে চৰ্চা
পিটি যোগ আসনে
সব মেদ খরচা l


বয়সের ভেদে
নিজ নিজ জেদে
একে একে করে যায়
কঠিন আসন
নিয়মিত চর্চায়
শিথিল বাঁধন l


নিয়মের শাসনে
চর্চায় আসনে
অসুখ পালিয়ে গিয়ে  
মনে আসে ফুর্তি
জুনের একুশে তাই
উৎসব পূর্তি l


9. ভোর হলো :


ভোর হলো গেট খোলো
গেট খুলে ঢোকো রে!
ঐ ডাকে টাউন ক্লাবে  
ছেলে বুড়ো ছোট রে!
রবি মামা দেয় হামা
গায়ে রাঙা জামা ঐ,
ভূতনাথ গায় গান
শোন ঐ, রামা হৈ!'


ত্যাজি বাড়ি তাড়াতাড়ি
আসে সব সদলে
ব্যায়াম করে সুস্থতা
অসুখের বদলে l
আছে এক বুলবুল
থাকে পাশে ফ্ল্যাটেতে,
তিনিও আসেন মাঠে
বসে যান মাটিতে l
প্রদীপদা জোড় হাতে
ঐ ক্লাস চললো
সকলেই হাতে জুড়ে
ওম ওম বললো l
আলসে নয় কেউ
আসে ঠিক মাঠেতে
রোজ তাই তারা পায়
দৃষ্টিটা চোখেতে l


মাঠ জুড়ে ছোটে সব
মন মতো মাতলো,
কে আগে কে পরে
কলরব ফুটলো l
দুমদাম ধুপধাপ
উঠবস চলছে
জয়গানে ভগবানে
মাঠ কথা বলছে।


10. মেঘসব ঝরে যায় :


মেঘেদের আনাগোনা শুরু হলো আকাশে
তা না দেখে মাঠ জুড়ে সব মন ফ্যাকাশে
শুরু হলো মেঘ নিয়ে নানাবিধ গণনা
মাঠ কোণে চৌকিতে কে ও বসে খনা না ?  
পুবে মেঘ, পশ্চিমে ইশানেতে নিশ্চিৎ
বলতে বলতে শুরু রিমঝিম বৃষ্টি l
পলিথিন নিয়ে সব ধরে ছাতা মাথাতে
এই টানে সেই টানে পোশাকটা বাঁচাতে l
ভূতনাথ তিরপল নিয়ে ঐ এসে যায়
ছাদ খোঁজে বৃষ্টিতে ছোটে সব নিরুপায় l
অপেক্ষা করে থাকে বৃষ্টিটা থামবার
কিন্তু আকাশে জমে কালো মেঘ নামবার l
সকালে আঁধার নামে মেঘ সব ঝরে যায়
এই করে ব্যায়ামের সময়টা চলে যায় l
ধীরে ধীরে একে একে বাড়ি যায় সকলেই
সকালটা কেটে যায় আসা যাওয়া ধকলেই l
বৃষ্টিতে না এসে ঘরে যারা থাকলো
খালি খালি ভিজে যাওয়া থেকে তারা বাঁচলো l
কিন্তু এ ঝামেলায় যারা সব জড়ালো
মেঘজল আঁধারে মাঠে পা বাড়ালো
কি যে পেলো তারা জানে এই শুভ সকালে
ভিজে সারা বৃষ্টিতে রিমঝিম অকালে l


11. নয় তো বৃথা :


আষাঢ়স্য দ্বিতীয় দিনে
ছেড়ে দে মা কেঁদে বাঁচি নে l
মাঠে আসা যোগের কারণ
প্রকৃতি মায়ের ছিলো বারণ l
যেই না বসা ত্রিপল পেতে
মেঘ বাবাজি গেলেন ক্ষেপে l
দিলেন ধমক এবং চমক
যোগশিবিরে উঠলো ধনক l
সবুজ মাঠে কালো ফরাস
বুকের ভিতর ধড়াস ধড়াস l
ওম বলে যেই ধরা আসন
প্রকৃতি মায়ের শুরু জাসন l
কালো কুচকুচ ঈশান কোণে
ছড়িয়ে গেলো সঙ্গোপনে l
মাথায় আকাশ মেঘের কয়েদ
টপটপাটপ ফোঁটা কয়েক l
বসে পড়েই আবার গোটাও
নিজের নিজের ছাতা ফোটাও l
তোয়ালে ফ্লেক্স গুছিয়ে নিয়ে
যে যার নিজের করলো ইয়ে l
নয় তো সকল কিছু বৃথা
মেঘবৃষ্টির আপন কথা
থাকলো কয়েদ ছবির ফ্রেমে
যোগশিশুদের যোগের প্রেমে l


12. রোদ কথা বলবে :


ঝমঝম সারাদিন ঝমঝম ঝমঝম
কখনো মুষলধারে কখনো বা কিছু কম l
ভোরবেলা মাঠে এসে তিনজন যোগভাই
ইন্দ্র রমেনদা আর আমি নিরুপায় l
মাঠ ফাঁকা বৃষ্টিতে, আশ্রয় নেই ফ্ল্যাটে
ধর্নায় বসে যাই যোগভাই তিনজন,
দাবি থাকে সোচ্চার থেমে যাও ঝমঝম l
কালকে একুশে জুন উৎসব চলবে
মাঠ জুড়ে যোগাসন নিজ কথা বলবে l
কিন্তু এ বৃষ্টিতে সব হয় পন্ড
মাঠ জুড়ে জলকাদা মনে নানা দ্বন্দ্ব l
এর মাঝে ভিজে সারা প্রদীপদা এসে যান
যা কিছু ঘটুক কেন সাহসটা দিয়ে যান l
উৎসব হবে কাল হবে যোগ দিবসে
এই কথা শুনে তাই মন নাচে হরষে l
কিন্তু এ ধর্ণা চলছে চলবে
বৃষ্টিটা থেমে গিয়ে রোদ কথা বলবে l


13. গেলো সব গাড়িতে :


গেলো সব গাড়িতে
ঐ রাজবাড়িতে l
যোগবেশ সজ্জন
সংখ্যায় পাঁচজন l
একজন আড়ালে
হাতটুকু বাড়ালে
ইটাহার শিবিরে
যোগে মন নিবিড়ে l
সাতদিন কলেজে
বাড়ে যোগ নলেজে l
পিটি যোগ আসনে
থিওরির ভাষণে
কেটে যাবে সাতদিন
তা ধিন তাক ধিন l


14. দিন যায় মাস যায় :


দিন যায় মাস যায় ঋতুগুলি হয় পার
শিবিরের যোগ ব্যায়ামে দিনে দিনে বাড়ে ধার |
'ওউম' ধ্বনি তিনবার তারপরে মন্ত্র
মেনে তা নিয়মবিধি শাসনের তন্ত্র |
তারপরে কিছু পিটি পিটি শেষে যৌগিক
সূর্যপ্রনামে এসে বুক করে ঢিপ ঢিপ |
যদি কেউ বিশ্রামে - "ওঠো ওঠো ওঠো রে
গরম লোহার পাত ঠোকো ঠোকো ঠোকো রে" |
কেউ বলে - "গানে হোক", কেউ বলে - 'সংখ্যায়',
যেদিন যা ঠিক হয় সেইমতো হয়ে যায় |
তারপরে পাটা করো টানটান শরীরে
হাতে পায়ে ভর দিয়ে অনুভূমি ধরো রে |
এর পরে শবাসন বিশ্রামে যায় সব
একে একে শুয়ে পরে পর পর ধপ ধপ |
এইখানে কিছু কথা কিছু থাকে ঘোষণা
কিছু পাওয়া কিছু হাওয়া উৎসুক এষণা |
থাকে সাবধানবাণী করো যতো সাধ্য
শরীরটা সামলে কেউ নয় বাধ্য l
আর থাকে দুই চোখে দুই ফোঁটা 'দৃষ্টি'র
চোখ জ্বলে তবু থাকে উপকার বৃষ্টির |
তারপরে প্রাণায়াম আর কিছু আসনে
সিডিউলটা বেশ চলে মিঠেকড়া শাসনে |
আর কিছু সূক্ষ্ম ব্যায়াম আছে ভাই রে
হাতে পায়ে চোখে ঘাড়ে বড়ো মজা পাই রে |
কিছু কথা তাত্ত্বিক দেহ মন সীমাহীন
মিলে যায় আত্মা পরমের মাঝে লীন |
সিংহ আসন করি জিভ আসে বাইরে
মুখেতে আওয়াজ করি দেখে সব তাই রে |
তারপরে হাহা হোহো হিহি করি তিনবার
প্রাণ খুলে হেসে পড়ি হাসি ব্যায়ামে জেরবার |
সব শেষে শান্তির বাণী পাঠ শিবিরে
জোড় হাতে সব্বাই সব মিঞা বিবি রে l
দিনে দিনে মেদ কমে রোগ যায় হারিয়ে
সুস্থ সবল দেহে সেঞ্চুরি ছাড়িয়ে |


15. ইন্দ্র ও নীহার :


সংসারে খটাখটি লেগে আছে ভাই রে
কিসে হয় সংসার কিসেই বা নাই রে |
কাজ কোনো শুরু হলে জুটে যায় কিছু লোক
তার কিছু কাজ করে কিছু করে ভোক ভোক |
অফিস বা কাছারি স্কুল কলেজে
ক্লাবে হাটে মাঠে ঘাটে শেয়ারিং নলেজে |
কথা পিঠে কথা ছোটে গ্রহণ বা বর্জন
খটাখটি মাঝখানে তর্জন গর্জন |
কিন্তু যেখানে থাকে একাধিক হাত জেনো
তালি সে তো বাজবেই যেন তেন প্রকারেন |


এত সব ভূমিকা শিবিরের জন্য
ইন্দ্র ও নীহারের ব্যাপারটা অন্য |
একজন না এলে অপরটা ব্যস্ত
ফোনে ফোনে জেরবার রাধা চায় কেষ্ট |
বন্ধুতা জব্বর পাশাপাশি বসবেই
যোগব্যায়াম করাকালে এ ওকে ঠুকবেই |
অভিযোগ ঘন ঘন ওঠে তাই শিবিরে
প্রকাশদা হাঁক দেন - বেতনটা দিবি রে |
বেতনের কথা শুনে দুইজন শান্ত
মুহুর্ত মাঝখানে শিষ্ট ও কান্ত |
তবু লাগে ঠকঠক আজ নয় কালকে
কর্তারা সামলান সংসার হালকে |


কিন্তু এ দুজনাই শিবিরের সম্পদ
কাজ করে দায় নেয় যেই বলা চটপট |


16. গোরা আউর কালা :


গোরা আউর কালা
বোথ আর ভোলাভালা
জানি তারা ফ্রেন্ড
কিন্তু ওদের ট্রেন্ড
সর্বদা একে অন্যের পিছনে লাগে  
কেউ আসে না কারো বাগে
নীহার কখনো শোনে কম
তা নিয়ে মজা কতোরকম
কিন্তু তার আসনে আছে দম
অতি সহজে করে কঠিন আসন
বলে চর্চায় হয় অনায়াসে
যেমন শীর্ষাসন ইন্দ্রের ভালো আসে
তবু কথা হয় যখন প্রাণায়ামকালে
যেই করুক, ধ্যানাসনের আড়ালে
যখন গুরুর চোখ থাকে না খোলা
দুই বন্ধুর হৃদয়ে দোলা
এ ওকে করে পোক
যেন দুজনই চীনে জোঁক
প্রকাশদা তপনদা দেন ঠেলা
দুই বন্ধুর তখন কমে রেলা
কিন্তু দুজনই পরস্পর অন্ত প্রাণ
একজন না এলে অন্যজন ব্যথা পান
এলে বসবেই পাশাপাশি
যতোই হোক তা নিয়ে হাসাহাসি
এভাবেই শিবিরে দিনগুলি যায় পেরিয়ে
যোগে পুরো ধ্যান কিছু দুষ্টুমি এড়িয়ে


17. আলম সাহাব :


হমারে আলম সাহাব
শিবিরমে নয়ে হ্যায়
হর দো তিন দিন বাদ
হমে বতায়া যাতা হ্যায়
কে ও কহিন গয়ে  হ্যায় l
আজ শিলিগুড়ি তো কাল বর্ধমান
ফির দিল্লী তো কভি আন্দামান l


এয়সে তো রহতে হ্যায়
টাউন ক্লাব কে পাশ ফ্ল্যাট মে
টাউন ক্লাব ময়দান -
যহাঁ হমারে শিবির লগতে হ্যায়,  
বহুত মিঠা হিন্দি বোলতে হ্যায় ও
কভি চুটকুলা শুনাতে হ্যায় এয়সে
কে হম সব হস পড়তে হ্যায় l


প্রদীপদা যোগ গুরু হমারে
যোগ জ্ঞান কা সাগর হ্যায়
আউর যো প্রকাশদা
বুজুর্গ হ্যায় হমারে
হর দিন বহুমূল্য যোগ কে কিতাব লাতে হ্যায়
বিষয় অনুসার উস কিতাব সে পড়ে যাতে হ্যায় কুছ
প্রদীপদা আচ্ছে তরিকে সে সমঝাতে হ্যায় সব
লেকিন বংলামে
কিউকে জ্যাদাতর বিদ্যার্থী বেঙ্গলি হ্যায়
ঘুমফিরকর আতে হ্যায় কভি হিন্দি মে
জব জ্যাদাতর বাতে খতম হো যাতি হ্যায় l


আউর যো হিন্দি প্রদীপদা বোলতে হ্যায়
আউর ভি হ্যায় বিদ্যার্থী হমারে
ও সব যো হিন্দি শুনাতে হ্যায়
ও তো না হিন্দি হ্যায় না বংলা
বস মিলজুলকে কুছ অলফাজ নিকলতে হ্যায়
আউর উসি সে কাম চলতে হ্যায় l


রোজ সুরজ নিকলতা হ্যায়
আউর হম সব ময়দান কি ওর চলতে হ্যায়
বিধাতা কো নমন করতে হুয়ে
যোগ প্রাণায়াম করতে হ্যায়
সময় ঢলতা হ্যায়
আউর হম সব যোগ কে বাদ
ঘর কে লিয়ে চল পড়তে হ্যায় l


আলম সাহাব হসমুখ হ্যায়
বাতে করতে হ্যায় তো দিল সে
অপনে নৌকরি কি বজে সে
আউট অফ স্টেশন রহতে হ্যায় কভি
ফির ভি যব শিবির মে আতে হ্যায়
সব সে ঘুলমিল যাতে হ্যায়
উনকে সাথ হিন্দি বাতচিতমে
শিবিরমে হম সবকো হিন্দিমে সুধার হো রহা হ্যায়
আলম সাহাব হসতে হ্যায় হসাতে হ্যায়
সব কি দিল মে অপনি জগা বনাতে হ্যায় l


18. দপ্তর বন্টন :


চাপ ও তাপ জেনো পদার্থ বিদ্যায়
কতো কতো ফর্মুলা রোজ রোজ দিয়ে যায় l
এক দুই তিন চার শত শত মৌলিক
ধর্মটা বলে দেয় ধরে ধরে ঠিক ঠিক l
জেনে নিয়ে ধর্ম পদার্থ ব্যবহার
রোজ রোজ বিজ্ঞানে নব নব উপহার l
উপহারে উপহারে জীবনটা আরামে
বিজ্ঞান জয়গান শহরে ও গেরামে l


পরিবার ভালো চলে সদস্য ভূমিকায়
ঠিক ঠিক কাজ যদি ঠিকমতো বেঁটে যায় l
এই ভাব এসেছিলো গুরুদেব মননে
চাপ তাপ বুঝে নিয়ে শিবিরের চলনে l
একখানি শিবিরে কাজ নয় একটা
শুরু থেকে শেষ তার দড়ি থেকে ব্যাগটা l
দায়িত্ব বেঁটে যায় যোগ ব্যায়াম শিবিরে
কিছু কাজ হালকা কিছু কাজ হেভি রে l


পায়েলদি দৃষ্টি ড্রপ দেন মমতায়
আর সাথে চাবিখানি থাকে তাঁর ক্ষমতায় l
বিবেকদা পেয়ে যান ওজনের দপ্তর
ওজনের কমা বাড়া তিনমাস অন্তর l
তপনদা অধীনে যৌগিক ব্যায়াম চলে
ঘাম ঝরে জেরবার তবু ব্যায়াম যায় চলে l
প্রকাশদা প্রশাসনে আর টাকা তুলতে  
নীহারটা ফেস্টুনে আর ঘুমে ঢুলতে l
সূর্যপ্রণাম চলে দীপুদার শাসনে
পঞ্চাশ ছাড়িয়ে ডজনের আসনে l
ভূতনাথ দাদা তিনি ত্রিপলের ভার পান
ঠিক ঠিক সময়েতে এসে যায় পদযান l


দপ্তর বেঁটে দেন প্রদীপদা কায়দায়
মাঝে মাঝে পিকনিক আর চলে খাইদাই l


19. প্রসার :


সঞ্জীবনী যোগ শিবিরের যোগ চর্চা এখন
ভিন রাজ্যে বিদেশ ভূমে করেছে বীজ বপন l
আলম সাহেব নিজ রাজ্য বিহারে তা নিলেন
তপন দাদা সিঙ্গাপুরে সদলবলে গেলেন l
আপন ঘরে মাধেপুরায় ঠিক ভোরবেলায়
আলম সাহেব ছেলের সাথে যোগ ফুল খেলায় l
তপনদাদা সিঙ্গাপুরে হোটেলের এক ছাতে  
পিটি যোগ আসন করেন প্রাণায়ামের সাথে l


রাজ্য যোগ সংস্থা এক আছে সে তো জানা  
নতুন করে তারই শাখা জেলায় হলো আনা l
যতো যতো যোগ শিবির এলো এক ছাতায়
পরিকল্পনা কতো নতুন হচ্ছে জোয়ার ভাটায় l
যোগব্যায়ামের কর্মশালা সাথে কম্পিটিশন
আন্তঃজেলা আন্তঃরাজ্য বিদেশও এম্বিশন l
দিনে দিনে যোগের বার্তা ছড়ায় দেশ বিদেশে
শরীর মনে সতেজতা যোগের মতো কিসে ?


20. হাঁটা শেষে :


জনা কয় যোগ করে মাঠে বসে রোজ
ফুটবল খেলা হবে ঘিরে মাঠ তারা,
হঠাৎ বারণ আসে শুরু করে খোঁজ
কোথায় যে যোগ করে খুঁজে খুঁজে সারা l
খুঁজে খুঁজে শেষটায় পেয়ে যায় দেশটায়
রেললাইন ধারে বেশ হাঁটার আরাম,
গোটা দল সাথে নিয়ে জোরপায়ে হাঁটে গিয়ে
দিনে দিনে দূর হয় সকল ব্যারাম l


হাঁটাহাঁটি শেষ হলে ওজনের কথা ভুলে
বাজারেতে নেমে গিয়ে খেজুরের রস
আর সাথে ভাকা পিঠা খেজুরের গুড়ে মিঠা
গুপগাপ খেয়ে নেয় দুই থেকে দশ l


যোগ ছেড়ে হাঁটা ধরে এই লাভ শেষে
হাঁটা শেষে খাইদাই মৃদু হাসি হেসে l


21. সঞ্জীবনী : যাদব চৌধুরী


একটিভ ভীষণই হোয়াটস অ্যাপে কয়জন
সঞ্জীবনীর তারা নিয়মিত সজ্জন,
লিপিদি, অর্পিতা, প্রদীপদা, সীমাদি
ভারতীদি তার সাথে পাতা রাখে আবাদী ?


একজন পোষ্ট করে উত্তরে বাকিরা
সারাদিন টিকটক লিখে যায় পাখিরা l
দিনে দিনে বেড়ে যায় সংখ্যাটা শিবিরে
তপনদা অ্যাড করে কতো দাদা দিদি রে l


বিবেকদা পোষ্ট করে পরপর ছবিগুলো
তার সাথে নিহারও দেয় ছবি কতগুলো
লিপিদির ভিডিও জ্ঞানে ভরা, মজারও
আরো কত পোষ্ট আসে সারাদিন হাজারো l


সকালের কসরত পিটি যোগ লম্ফ
প্রাণায়াম, বিশ্রাম - কমে হৃৎকম্প l
শুধু নয় যোগ সাথে ভোজনের আয়োজন
পিকনিক ভ্রমণের সামাজিক বিনোদন l


আবদারে অভিমানে বিতর্কে জমজম
সক্কালে টাউনক্লাবে মানুষের গমগম l
এইভাবে দিনগুলি মাসগুলি কেটে যায়
সঞ্জীবনীর গতি দিনে দিনে বেড়ে যায় l