ঘুড়ি - ১


ঘুড়ি তু্ই উড়ে গেলি আকাশে !
তাই দেখে কতো মুখ ফ্যাকাশে l
বলে ঘুড়ি - কি যে বলো কত্তা
বোঝোনিকো তুমি ঘুড়ি সত্ত্বা ?


ঘুড়ি সে তো জন্মায় উড়বার জন্য
নীলাকাশ, সুবাতাস - উড়ে তো সে ধন্য l
- চুপ চুপ ঐ শোনে লাটাইয়ের ছেলেটা
সুতো তার ঝুলে পড়ে কেটে গেলে ঘুড়িটা l


সে কি রাগ, গাল দেয়, লাট খেয়ে পড়ে যাই
জানে না তো ঘর ভাবি গোটা সে আকাশটাই l
গিরগিটি বলে রেগে, বলে আরো কতো কিছু
ভোকাট্টা শাপ দেয় - ছিঁড়ে খাক বনপশু l


নর্দমা রেডি রাখে ঘুড়িটার জন্য
জানে না তো, ঘুড়ি - তার জীবন অনন্য l
মেঘের মুলুক জুড়ে কাজ তার ওড়াটাই
যারা শুধু কাদা ঘাঁটে আজে বাজে বকে যায় l


আজে বাজে বকে, আর একে তাকে দেয় গালি
ঘুড়িসব চুপ থাকে, সৃষ্টিতে মাতে খালি l
ঘুড়ি রোগ বড়ো রোগ ঘোড়াদের কামড়ায়
কামড় খেলেই দেখি ৱ্যাশ ওঠে চামড়ায় l


** সন্ধ্যাপ্রদীপ দ্বিতীয় বর্ষ, বৈশাখ ১৪২৯ চতুর্থ সংখ্যায় প্রকাশিত


ঘুড়ি - ২


ঘুড়ি রে তু্ই দেখতে খাসা
তু্ই আমাদের ভালোবাসা
কেন রে তু্ই ফুড়ুৎ ফুরুৎ উড়িস ?
এই শহরে সেই শহরে ঘুরিস !


অভিমানে দিলাম তোকে ছেড়ে
যা উড়ে যা পাখনাটা তোর ঝেড়ে l
ওড়াতেই তোর নজর ছিলো বেশি
তাই তো করিস বেশি মেশামেশি l


যেখানেই যাই দেখি তো তোর ধরন
আসল গুরু ছেড়ে করিস নকল গুরু বরণ l
নীল আকাশে উড়িস সকাল বিকাল
লাট খাবি তু্ই দেখবি নিজের অকাল l


শিশিরভেজা পুব আকাশের থেকে
যত্নে তোকে নামিয়ে শেখাই কতো
সেসব নাকি ভাল্লাগে না তোর
তুইও শেষে গিরগিটিদের মতো ?


যা উড়ে যা মেঘমুলুকে নিজের
দুষ্টু ঘুড়ি আস্ত একটা গড়া
ভোকাট্টা হবি যেদিন শেষে
দুষ্টু লোকের হাতে পড়বি ধরা l


আমার আদর বুঝলি না তু্ই মেয়ে
অন্য লোকে প্রিয় আমার চেয়ে
দুঃখে যেদিন কাদঁবি পথে বসে
কেউ দিবে না ধরা কাছে এসে l


নর্দমাতে পথের পাশে পড়ে
লজ্জাটা তু্ই ঢাকবি কেমন করে ?
ছেড়ে দিলাম যা উড়ে যা এখন
বুঝবি ওড়ায় আছে কেমন মাখন l


একলা উড়ে পাবি না রে মজা
বলবে সবাই নষ্ট ঘুড়ি ওটা
গুরু ছেড়ে লঘু পথে চলিস
শুকায় সে ফুল ছেড়ে গেলে বোঁটা l


- দাও ছুঁড়ে দাও, বলবে সবাই জোরে
বুঝলি না তো আছিস মাতাল ঘোরে l
কাটবে যেদিন মাতলামির এই ঘোর
বুঝবি সেদিন আসল আপন এই গুরুটাই তোর l


481