একাত্তর সাল l উনিশ শ l দিনেরাতে হঠাৎ সাইরেন বাজলে
বাড়ির কাছাকাছি এল্ আকার গর্তে সবাই ঢুকে পড়তুম l
হাতে মৃদু আলো, মুখ নিঃশব্দ, চোখে ভয়, কান উৎকর্ণ l
প্রশাসন এর নির্দেশে আগে থাকতে তৈরী হত এরকম ডেরা,
নামা ওঠার জন্য মাটির সিঁড়ির মতো ছিলো আয়োজন l
সব বাড়ীতেই এরকম ছিলো নিশ্চিত আপৎকালীন ব্যবস্থা l
তারপর আবার সাইরেন বাজত বিপদমুক্তির, দল বেঁধে
হুড়মুড় করে বেরুতাম সুড়ঙ্গ থেকে, মুখেচোখে মাটি মেখে l
মাথা উঁচু হত গর্বে, প্রতিবেশী ভাষা সহোদর দেশকে
মর্যাদার সঙ্গে বাঁচবার পথ করে দিচ্ছি, এই ভাবনায় l


প্রায় অর্ধ শতক পর আজও সাইরেন বাজে ভিন্ন সুরে,
মারণাস্ত্র মজুত ক্ষুদ্র সমাজবন্ধুদের পকেটে পকেটে,
আক্রমণ প্রতি আক্রমণে শক্তি প্রদর্শন এলাকা জুড়ে,
বাতাসে বারুদের গন্ধ, মাটিতে আতঙ্কের স্রোত বহমান l
অকালে কোল খালি স্নেহময়ী মায়ের, সিঁদুর হারায় বধূ
পুত্র জানে না ফুলে মোড়া স্বর্গরথে শয়ান বাবা কোথায় যায় ?
প্রকাশ্যে সমাজ সেবা, রক্তদান শিবির, সাংস্কৃতিক নিবেদন
সভা, সমিতি, ক্রীড়ানুষ্ঠান, পূজা আয়োজন সার্বজনীন l
স্কোয়ার ফুটের আশ্রয়ে নাগরিক সমাজের আত্মগোপন,
মাথা নিচু, নজর নিয়ন্ত্রণে, শুধু নিজ কাজে মন নিবেদন l


একাত্তরের বাংলাদেশ, তার পাশে আত্মগর্বী গৃহস্থ জনবল,
যুগের দাপটে আজ এলাকা শাসকদের দৌরাত্ম্যে হীনবল l