জয়া, পিসতুতো, দিদিও নয়, আবার বোনও নয় l
সমবয়সী l স্কুল কলেজ ইউনিভার্সিটি আলাদা l
কিন্তু পড়েছি একই ক্লাশে, বরাবর l থেকেছি
একই গ্রামে, দুজনেই মামাবাড়িতে l দুই মামাবাড়ির
দূরত্ব চার পাঁচটা বাড়ি l
একই ক্লাশে পড়তাম, কিন্তু জয়া আমাদের থেকে
আধুনিক ছিল l বাসে করে রোজ কলেজ যেতাম l
ও ছিলো আমাদের হিরো, লিঙ্গে ভুল করে ফেলেছি ?
ওটা ইচ্ছা করেই l আসলে ও যা করত ওকে হিরোইন
বলা যায় না l ও ছিলো আমাদের নেতা l আবার ভুল ?
আচ্ছা নেত্রী, আমাদের সব সমস্যার ও ছিলো সমাধান l
গ্রামের মেয়ে, কলেজে পড়ছে ঠিক আছে,
কিন্তু অনেক ব্যাপারে এই আধুনিকতা ব্যাপারটা
অভিভাবকদের মানতে অসুবিধা হত l পড়াশোনার
সাথে সাথে ঘরের টুকিটাকি কাজ শিখবে, রান্নাটা,
শেষে এগুলো তো প্রয়োজন হবে, না কি ?
কিন্তু জয়া ঘরের কাজে হাত লাগালে তো !
তাকে বাইরের কাজ দাও, কাছে কিংবা দূরের শহরে
অফিসে বা দোকান, হাসপাতালে.
ছেলেদের চেয়েও দক্ষতা বেশি প্রমাণ করে
ঠিক সে কাজটি করত l


এরকমই চলছিলো l পড়াশোনা, অরাজনৈতিক নেতৃত্ব,
তারপর সবার যা হয়, মেয়েদের একটু আগে হয় এই যা,
জয়ার বিয়ে হল l দূরদেশে গেল সে l তারপর আর
যোগাযোগ কই ? নিজেরও কত কাজ !
অনেক, অনেকদিন পর শেষে যোগাযোগ হল l
একটা কাজে ওরা যে শহরে থাকে সেখানে গেলাম,
খোঁজ করে ওদের বাড়ি l এবং জয়ার সামনে l
কোন্ জয়া ? গৃহিণী পুরোপুরি l সব দায়িত্ব একা সামলায় l
যাকে বলে একেবারে জুতো সেলাই থেকে চণ্ডীপাঠ l
রান্নার কি বহর ! আর সে রান্নার কি স্বাদ !
আমার মা মারা গেছে বছর দুয়েক হল l বলে কিনা,
মা না থাকলে দিদি মায়ের জায়গা নেয় l যাকে দিদিও
ভাবি নি কোনদিন, সে মায়ের জায়গা নিল l
ছাত্রজীবনে কি শিখি আমরা ? সকালের আকাশ দেখে
বিকালের মেঘের কি আভাস পাওয়া যায় ?
বিদ্যালয়ের শিক্ষা জীবনের সংগ্রামে কতটা কাজে আসে ?


যখন কাঁধে পড়ে ভার, আর ভালবাসা ও কর্তব্যের বন্ধন,
তখন সব শিক্ষাই সহজাত হয়ে যায় l