আমি ছিলাম অবিকশিত এক গোলাপ কলি।
প্রস্ফুটিত হওয়ার আগেই আমাকে বৃন্তচ্যুত করেছে একদল বেওয়ারিশ বেজন্মা। পাপড়ি মেলার আগেই টুকরো টুকরো করে ছিন্নভিন্ন করেছে আমায়।
ক্ষুধার্ত নেকড়ে শিকার ধরে যেমন উল্লাস করে,
অভুক্ত হায়না জীবন্ত পশুকে ধরে যেমন চিৎকার করে,
তেমনি পৈশাচিকভাবে আমাকে নিয়ে মেতেছিল একদল দ্বিপদ শার্দূল । কোন দুর্ভাগা মায়ের অবাঞ্চিত জারজ।


আজ আমি মূল্যহীন, অপাংক্তেয়, সমাজের কাছে অস্পৃশ্য! অথচ আমি ছিলাম অনাঘ্রাত। এখন আমায় দেখে কিছু লোকের অনুকম্পা হয়, কিছু লোক সমবেদনা জানায়, কিছু লোক আহা-উহু করে। আর কিছু অবাঞ্ছিত নপুংসক, লম্পট, বর্বরেরা শিয়ালের মতো খ্যাক খ্যাক করে হাসে।


আজ আমায় দেখে লজ্জা পায় সূর্যদেব,
আলো ছড়াতে ভুলে যায় রাতের চাঁদ,
কোকিল ভুলে যায় তার সুললিত সুর।
কিন্তু সমাজে বুক ফুলিয়ে হাঁটে সেই সব দুর্মদ, বর্বর যারা পাপড়ি মেলার আগেই গুঁড়িয়ে দিয়েছে আমার স্বপ্ন, আমার ভালোবাসা, আমার সোনালি ভবিষ্যৎ।
আমার লজ্জা হয় ওদের নির্লজ্জতা দেখে!


ভয় এবং লজ্জায় কুঁকড়ে থাকবো না আমি আর।
জ্বলে উঠবো বহ্নিশিখা হয়ে, নিদাঘ দুপুরের মার্তণ্ডের মতো। জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করে দেবো বর্বরদের স্বপ্নে গড়া নৈরাজ্যের স্বপ্ন বাসর।


আমি লজ্জা পাবো কেন? আমার দুর্দশার জন্য আমি তো দায়ী নই। লজ্জা পাবে তো তারা, যাদের হিংস্র থাবায় আমি ক্ষতবিক্ষত! লজ্জা পাবে সে সব সারমেয়ার, যারা লুট করেছে আমার সর্বস্ব।
লজ্জা পাবে বেহায়া পামর, বেহায়া দুর্মদ; আমি কেন?
লজ্জা পাবে জালিমদের দোসর; আমি কেন?
আমি নিগৃহীতা গোলাপ কলি বলে?


১৫/১০/২০২০ ইং