রাজা-বাদশা দুই সহোদর মা গিয়েছে মরে,
বাবা ওদের অনেক আগেই গিয়েছিল ঝরে।
বয়স ওদের বার-তের নেইতো খাবার ঘরে,
দুখের ঘরে নামলো আঁধার কাল বোশেখী ঝড়ে।


থাকতো ওরা বস্তি ঘরে মাসে মাসে ভাড়া,
ভাড়া বাকি রেখে দু-মাস মা গিয়েছে মারা।
বাড়ির মালিক বলল এসে, 'ঘরটা ছাড়ো এবার,
অনেক টাকা বাকি আছে তোমার মায়ের দেবার।'


রাজা-বাদশা ভ্রাত্রিদ্বয়ে তাকায় দোহা পানে,
এ ঘর ছেড়ে কোথায় যাবে স্রষ্টাই শুধু জানে!
রিক্ত হস্তে অশ্রু নেত্রে রাস্তায় এসে দাঁড়ায়,
খাবার জন্য ভিক্ষা মেগে হাতটা সামনে বাড়ায়।


চাঁদপানা মুখ দেখে ওদের সন্তানহীনা নারী,
বলল যেতে তাহার সাথে তাহার আপন বাড়ি।
খাবার দেবে, সোহাগ দেবে, দেবে সুযোগ শিক্ষার,
শুনলে কথা প্রয়োজন আর হবে না তো ভিক্ষার।


দয়াবতী নারীর কথায় গেল তাহার সদন,
সমাদরে, সুখ-হাসিতে ভরে ওদের বদন।
নিজের ছোট্ট কারখানাতে দিলেন ওদের কর্ম,
থাকা-খাওয়ার উপায় হলো পেলো ওরা বর্ম।


এমনিভাবে কোথা দিয়ে পাঁচটি বছর যায়,
গুণবতী নারী খুশি ওদের সততায়।
ওদের টাকায় ওদের জন্য বানায় পণ্যাগার,
বুদ্ধি পরিচর্যা দিয়ে সাতটি বছর পার।


ওই শহরে রাজা-বাদশা বড়ো ব্যবসাদার,
মায়ের অভাব ছাড়া ওদের নেইতো দুঃখ আর।
যার দয়াতে কষ্ট-ঘামে জীবন হলো থির,
সুখে-দুখে তার চরণে ঝরায় অশ্রুনীর।


১৯/০৩/২০২১ ইং