রনির ভীষণ কাছের বন্ধু গণপতি নাম,
দুর্ঘটনা কবলিত হয় বৃন্দাবন ধাম।
খবর পেয়ে রনি ভোরে হাসপাতালে যায়,
সকাল কখন দুপুর গড়ায় হদিস নাহি পায়।


প্রিয় বন্ধুর বিদায় মনে শোকের মাতম আনে,
ক্লান্ত-শ্রান্ত ভুখা দেহে হাঁটে বাড়ির পানে।
বিমর্ষ মুখ, বিষণ্ণতায় মাটির দিকে আঁখি,
বাড়ির মুখে জন্মদাতা বললো ভীষণ হাঁকি,
এমনি করে আর কতকাল চলবে এবার শুনি?
খাওয়া-পরার নেই তো চিন্তা চলছো স্বপ্ন বুনি।


নিরুত্তরে চলছে রনি মলিন বদনখানি,
দাদা দেখে বলল হেঁকে, ভাইটি আমার মানী।
মাথার উপর বাবা, দাদা চিন্তার কিছু নেই,
যেথায় খুশি যেমন খুশি নাচতে পারে ধেই।


বাবা-দাদার কথা শুনে পাচ্ছে ভীষণ কান্না,
সামনে এসে দাঁড়ায় তখন ছোট্ট বোন ওই পান্না।
ছোড়দা তোমার আক্কেলটা কি? লজ্জায় আমি মরি!
যাবার কথা তোমায় নিয়ে যেথায় আমি পড়ি।
মা জননী একলা আমায় দেয়না কোথাও ছেড়ে,
এমনি তোমার বেয়াক্কেল টা যাচ্ছে নিতি বেড়ে।


মনের খবর রাখে না কেউ বলছে যেমন খুশি,
দহন হৃদয় দুমড়ে দিয়ে করছে সবাই দুষি।
ধীরপদে মায়ের ঘরে বাড়ায় যেমনি মুখ,
মলিন শুকনো বদন দেখে মায়ের কাঁপে বুক।


সারাটা দিন কোথায় ছিলি? খাস নি বুঝি কিছু?
মুখটা এতো মলিন কেন? মাথা কেন নিচু?
বাবা-দাদার বকা শুনে, বোনের শুনে ধিক্কার,
বুকের মধ্যে যে কষ্টটা চাইছে দিতে চিৎকার,
মায়ের কোমল মধুর স্বরে কান্না হয়ে ঝরে,
আদরে মা ওকে টেনে নিলেন বক্ষ 'পরে।


মধুর স্বরে সুধায় মাতা কি হয়েছে, মানিক?
পিঠে, মাথায় হাত বুলিয়ে সান্ত্বনা দেয় খানিক।
কান্না ভেজা করুণ কন্ঠে বললো মাথা নেড়ে,
দুর্ঘটনায় গণপতি গেল আমায় ছেড়ে।


এ সংসারে বেকার ছেলে সবার মাথার বোঝা,
যখন-তখন যা খুশি তাই বলা তাকে সোজা।
মুখ দেখে কেউ মায়ের মতো বোঝেনা তার জ্বালা,
বেকারত্বের দহন জ্বালায় জীবন ঝালা-পালা।


১৯/০২/২০২১ ইং