বন্ধুর সাথে ইষ্টিশনে খাচ্ছি বসে চা,
অল্প-স্বল্প লোকে ভরা ইষ্টিশনের গা।
হাসি-গল্পে কাটছিল কাল হঠাৎ দেখি পাশে,
পেটের 'পরে রেখে হস্ত একটি পাগল কাশে।


গর্তে বসা অক্ষি যুগল ধুলোমলিন গায়,
নির্নিমেষে আমার দিকে বারে বারে চায়।
বয়স হয়তো কুড়ি-একুশ উসকো-খুসকো চুল,
দুর্দশা ওর দেখে বুকে বিঁধছে দারুণ হুল।


কোন অভাগীর বুকের মানিক পাতার মতো ঝরে!
পথে পথে ঘুরে ঘুরে ধুঁকে ধুঁকে মরে!
পুত্রহারা মা জননী হয়তো কাঁদছে ঘরে,
বুকের ভেতর উথাল-পাথাল কাল বোশেখী ঝড়ে।


অজানা এক কষ্ট-আঘাত বুকে এসে লাগে,
ওকে কিছু খাবার দিতে মনে ইচ্ছে জাগে।
পাছে লোকে কিছু বলে ভাবনা এলো মনে,
দ্বিধান্বিত হয়ে খানিক ভাবছি ক্ষণে ক্ষণে।


বন্ধুর কাছে ইচ্ছে প্রকাশ করলাম অনেক ভেবে,
বলল হেসে, থাক না এসব, কত লোকেই দেবে।
একবার ভাবি থাক তবে থাক, আবার ভাবি কেন?
কত টাকাই নষ্ট করি করে হেন-তেন।


ওকে কিছু খাবার দিলে লাগবে ভীষণ ভালো,
নইলে মনের মধ্যে জেগে থাকবে কষ্ট-কালো।
ঝেড়ে ফেলে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব কটা বিস্কুট নিয়ে,
খাবি? বলে বাড়িয়ে দিলাম দক্ষিণ হস্ত দিয়ে।


কাগজ ছাড়া দিয়েছিলাম, বলল একটু হেসে,
"কাগজে দাও" বলেই নিজে কুড়িয়ে নিল শেষে।
কী অনাবিল শান্তি পেলাম বোঝানো খুব দায়!
বিবেক বাণী শুনলে হৃদয় শান্তি খুঁজে পায়।


২৫/০৪/২০২১ ইং


আমার নিজের জীবনে ঘটা সম্পূর্ণ সত্য ঘটনা।একটা পাগলকে কিছু খাবার দিতে গিয়ে নিজের মধ্যে যে দ্বিধাদ্বন্দ্বের টানাপোড়েন সেটাই আমাকে লিখতে উদ্বুদ্ধ করেছে। জানিনা আর কারো হয় কিনা।