ধুলো জমা স্মৃতির পাতায় যখন বুলাই হাত,
মনের মধ্যে জেগে ওঠে কত মধু রাত!
হাসি-গানে মাতিয়ে রাখা গাঁয়ের সন্ধ্যাবেলা,
উঠোন 'পরে বসতো কত গল্প-গানের মেলা!


বর্ষাকালে গাঁয়ের লোকের ছিল না তো কাজ,
গল্প হবে এই আশাতে চলতো নানা সাজ।
মাসি-পিসি, দাদু-ঠাম্মা, কাকা-কাকি মিলে,
উঠোন 'পরে চাটাই পেতে বসতাম মিলে-ঝিলে।


গল্প শোনার ফাঁকে ফাঁকে খেতাম কত কিছু,
ঘুম বাহাদুর কখন এসে করতো মাথা নিচু!
ঝটকা মেরে আবার জেগে শুনতে পালা গান,
মায়ের থেকে চেয়ে নিতাম একটা খিলি পান।


গল্পে গল্পে কেটে যেতো এমনি কত রাতি,
চাঁদের সাথে আকাশ ভালে জ্বলতো তারার বাতি।
নায়ে ঘুরতাম মাঝে মাঝে বানিয়ে সাদা পাল,
এমনি করেই গাঁয়ের লোকের কাটতো বর্ষাকাল।


চৈত্র মাসের খাঁ খাঁ রোদ্দুর উদম গায়ে মেখে,
হারিয়ে যেতাম তেপান্তরে রাখালী সুর হেঁকে।
মাঝে মাঝে কাটতো সময় বটের ছায়া তলে,
অনেক সময় কাটতো সুখে সাঁতার কেটে জলে।


গল্প-গানের আসর এখন বসে না আর গাঁয়ে,
সব কিছু আজ দলিত ভাই মুঠোফোনের পায়ে।
গল্প-গাথা, খেলাধুলা নিলো মোবাইল কেড়ে,
পরস্পরের ভালোবাসা পালিয়ে গেলো ঝেড়ে।


এখন সবাই কর্মব্যস্ত, আত্মস্বার্থে মগ্ন,
পরের ক্ষতি করার ক্ষেত্রে সবাই দারুণ নগ্ন।
আবার যদি আসতো ফিরে গাঁয়ের মধু হাসি,
বাজতো যদি মধুর সুরে বৃন্দাবনের বাঁশি।


১২/০৪/২০২১ ইং