যদি আমি বলি তুমি চাটুকার অমনি ধ'রবে অসি,
আমিও রয়েছি প্রস্তুত হয়ে বাগিয়ে রুদ্র মসি।
তেল দিয়ে দিয়ে হয়তো সহজে স্বার্থ আদায় হয়,
বিবেকের পিঠে কষাঘাত লাগে, নেমে আসে পরাজয়।


শাসকের গায়ে তেল মেখে দিলে বড়ো কবি হওয়া যায়,
আত্মা বিক্রি ক'রে কি সবাই ভুল-ভাল গান গায়?
সুবোধ-অবোধ অনেক রয়েছে শাসকের পদতলে,
মাথা পেতে দিয়ে গুণগান গায় স্বার্থ লাভের ছলে!


তেল মর্দন দক্ষ লোকের উপরে ওঠার সিঁড়ি,
অনায়াসে পায়, অপরে যেখানে পার হয় নদী-গিরি।
আমি নই কোন তাবেদার, জেনো- তল্পিবাহক নই,
কাঁটার বদলে আদর-সোহাগে ভেবো না খাওয়াবো দই।


এক চড় দিলে দুই ঘা বসিয়ে বাজাবো প্রলয় বাঁশি।
আঘাত এলেই সমান আঘাতে হাসবো ভায়াল হাসি।
                                      আমি প্রতিবাদী কবি,
অন্যায় আর অবিচার রোধে সৃজিব রুদ্র ছবি।


কার ভালো লাগে, কার মস্তকে অগ্নি মশাল জ্বলে,
সেই কথা ভেবে ধ'রলে কলম ধরা যাবে রসাতলে।
কবি-লেখকের কলমে যদি না বিদ্রোহ ওঠে ফুটে,
জালিম শাসক জনতার ধন নেবে অনায়াসে লুটে।


বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল বারুদ লেখনি দ্বারা,
ব্রিটিশের ঘুম নিয়েছিল কেড়ে ছিল না অন্ধ তারা।
জেল-জুলুমের করেনি কো ভয়, করেনি লাভের আশা,
ওপারে গিয়েও সমানে পাচ্ছে অমলিন ভালোবাসা।


দ্বিধাহীন ভাবে ব্রিটিশের দান ফিরায়ে দিয়েছে গুরু,
তবে কেন আজ আমরা দেখি গো শাসকের কড়া ভুরু?
ইঁদুরের মতো সবাই যদি গো গর্তে লুকিয়ে পড়ি,
যুগের বার্তা কে দেবে জালিমে? কে পরাবে গলে দড়ি?


তরুণ-তরুণী কবি ও লেখক প্রেম নিয়ে আছে ব'সে,
বদ শাসকের তোবড়ানো গালে কে দেবে গো চড় ক'ষে?
কবিরাই পারে রুখে দিতে ওই শাসকের পদাঘাত,
কবিরাই পারে মুছে দিতে ওই দীনের অশ্রুপাত।


চুপ কেন থাকো? জেগে ওঠো কবি, মসির কৃপাণ হানো,
দ্যুলোক-ভূলোক ছেদিয়া-ভেদিয়া সুদিন-ছিনিয়ে আনো।
মার্তণ্ডের তেজ জিনে নিয়ে ছড়াও রুদ্র তাপ,
জ্বালিয়ে পুড়িয়ে শেষ করে দাও জগতের যতো পাপ।


০১/০৭/২০২২ ইং