সেদিন সকালে রাস্তায় দেখি ছোট্ট ছেলের কাজ,
বিস্ময়ে ভাবি এ কেমন ছবি এ কেমন মহারাজ!
কচি দুটি হাতে ঠেলে নিয়ে যায় ছোট্ট কাঠের গাড়ি,
পঙ্গু-বৃদ্ধ বাবা বসে তায় পক্ক কেশ ও দাড়ি।


মুখে লেগে আছে অনাবিল হাসি খুশির দমকে হাঁটা,
আরো ভেবে মরি দেখে তার আমি শক্ত বুকের পাটা।
নির্ভাবনায় পার হয়ে যায় ব্যস্ত সড়ক সোজা,
কুলি কামিনীরা কেউ হেঁটে যায় কাঁধে নিয়ে ভারি বোঝা।


ধাবমান গাড়ি ছুটে চলে যায় ডান-বাম দিয়ে তার,
তবু ঝুঁকি নিয়ে হেসে হেসে রোজ হয় সে রাস্তা পার।
দক্ষিণ হাত উঠিয়ে থামায় উল্কা গতির যান,
চাকা ঘর্ষণে শান্ত সকাল হয়ে যায় খান খান।


ছিন্ন পোশাক, ধুলি মাখা তনু, উসকো-খুসকো কেশ,
গৌর কান্তি চেহারা শিশুর দেখতে লাগে যে বেশ।
নিরুদ্বিগ্ন শিউলি হাসির মুখ দেখে মনে হয়,
জন্ম নিয়েছে ধরণীর বুকে করে নিতে সব জয়।


খোঁজ নিয়ে দেখি সুবোধ বালক ভিক্ষাজীবীর ছেলে,
ঘুম থেকে উঠে নিয়ে যায় শিশু বাবার গাড়িটি ঠেলে।
রোজ সন্ধ্যায় ফিরিয়ে আনে সে বাবাকে ঝুপড়ি ঘরে,
বেদনায় ভাবি, কোমল কুসুম যাচ্ছে ধুলোতে ঝ'রে।


দুর্ভাগা শিশু কিছু না পেয়েও হাসি-খুশি ভরা মন,
মানবতাহীন নিঠুর ধরায় নিপীড়িত সারাক্ষণ।
এভাবে হাজার হাজার শিশুর প্রতিদিন হয় ভোর,
বিত্ত-বিলাসী মানুষের কাছে বন্ধ ওদের দোর।


০২/১১/২০২১ ইং।