স্রষ্টা ছিলেন, আছে, থাকবেন অনন্তকাল ধ'রে,
নয় বাঁধা কারো আঁচলে স্রষ্টা নয় বাঁধা কারো ঘরে।
অবিনশ্বর, চির ভাস্বর নেই তার কোন রূপ,
শাশ্বত এই মহাবিশ্বের তিনি নিরাকার ভূপ।


আকাশ-বাতাস-চন্দ্র-সূর্য বিস্ময়কর সব,
সৃষ্টি করে সে বিরাজিত আছে নীরবে করে যে রব।
তাঁকে খুঁজে ফেরো মন্দির আর মসজিদে প্রতিরোজ,
প্যাগোডা-গির্জা কোথাও পাবে না যতোই করো না
খোঁজ।


তিনি বিরাজিত মানুষের মাঝে প্রত্যেক কোষে কোষে,
বৃক্ষরাজির পাতায় পাতায় রয়েছেন তিনি বসে।
ছোট-বড়ো সব তারি যে সৃষ্টি কেন করো অবহেলা?
বিলাস-ব্যসনে মেতে থেকে কেন হেলায় হারাও বেলা?


চেয়ে দেখো তার সৃষ্টির দিকে পক্ষপাতের ছায়া,
কোথাও পাবে না, সার্বজনীন তার সৃষ্টির মায়া।
অথচ মানুষ করেছে সৃষ্টি কত বিস্ময়কর!
তার কোন কিছু সার্বজনীন? নাকি অবিনশ্বর?


অনাম্নী তিনি, মানুষ নিজের বুদ্ধি-চাতুরী দিয়ে,
নিজের ডঙ্কা পেটাতে সদাই ডাকে নানা নাম নিয়ে।
কেউ তাঁরে বলে আল্লাহ মহান, কেউ বলে ভগবান,
ঈশ্বর ব'লে মাথা নত ক'রে কেউ দেয় সম্মান।


নিরহংকার ওই স্রষ্টার নেই কোন ভেদাভেদ,
বিভেদ এনেছে মানুষের গড়া ধর্মের বিচ্ছেদ।
এই ধরণীর মানুষের মাঝে চারটি প্রধান ধর্ম,
প্রত্যেকে তার নিজ ধর্মকে ভাবেন সঠিক বর্ম।


স্রষ্টাই যদি সৃজিবে ধর্ম কেন তবে এতো ভাগ?
সার্বজনীন নয় কেন বলো ধর্মের অনুরাগ?
পৃথিবীতে আছে যতো ভেদাভেদ ধর্ম রয়েছে মূলে,
মানুষ, আপন ধর্ম শ্রেষ্ঠ বানাতে বিবেক খেয়েছে গুলে।


মানবের কোন্ সৃষ্টি বলো তো অনাদি-অন্তহীন?
অনন্ত সেবা দিয়ে যায় এই বিশ্বে রাত্রি-দিন?
প্রকৃত সত্য অনুভবে এসো ভ্রান্তি-বিলাস ছাড়ি,
ধর্মের নামে অধর্ম নেয় মানব জীবন কাড়ি।


চক্ষু-কর্ণ-নাসিকা-জিহ্বা-রক্ত নয়তো ভিন্ন,
তবে কেন বলো ধর্মের রোষে হচ্ছি সবাই ছিন্ন?
বিদ্রোহী কবি, রবীন্দ্রনাথ দিয়ে গেছে দিক দর্শন,
ভেদাভেদ ভুলে এসো না সবাই মানবতা করি কর্ষণ।


০৮/১১/২০২১ ইং।