আমার যেতে ইচ্ছে করে সেই সে ছোট্ট গাঁয়,
গাছের ছায়ায় লতায়-পাতায় নিবিড় বনের ছায়।
ভোরের বেলায় পাখির ডাকে ভাঙ্গতো আমার ঘুম,
সূয্যিমামা আলতো করে দিত ভালে চুম।


বাড়ির পাশে ছোট্ট নদী স্যানখালী তার নাম,
মনের সুখে সাঁতার কেটে সময় কাটাতাম।
কারো গাছের তেঁতুল পাড়তাম কারো গাছের আম,
সুযোগ পেলেই পেড়ে আনতাম কারো গাছের জাম।


মায়ের বকা, বাপের পিট্টি খেতাম তখন বেশ,
রাত পেরোলে ভুলেই যেতাম থাকতো না তার রেশ।
সারা বছর মেঠো পথের ধুলো মেখে গায়,
খালের জলে করতাম স্নান কেবা কারে পায়।


মাঝে মাঝে মালিকুরি ধরতে যেতাম মাছ,
বিলের কোথাও ছিলনা তো জিরান দিতে গাছ।
রোদে পুড়ে, ঘাম ঝরিয়ে ধরতাম পুঁটি, কই,
আরো ধরতাম রয়না, জিয়ল করতাম যে হইচই।


সন্ধ্যাকালে ফিরতাম বাড়ি মনের ভেতর ভয়,
বাপে দেখলে রীতিমতো বাঁধবে যে প্রলয়।
বাড়ি ফিরে দেখতাম মায়ের শুকনো কালো মুখ,
খাবার সাথে জুটতো বকা কী যে লাগতো সুখ!


বর্ষাকালে বিলের জলে শাপলা তোলার সুখ,
আরো ভালো লাগতো সাথে থাকলে প্রিয় মুখ।
বর্ষাকালে জোছনা রাতে ঘুরতাম সুখে নায়,
শরীর ও মন জুড়িয়ে দিতে বইতো হিমেল বায়।


শীতের দিনে চুরি করে খেতাম খেজুর রস,
আস্ত কুলের আচার খেতাম রসেতে  টস টস।
সেই দিনগুলি মনের কোণে জাগায় যখন ভিড়,
ইচ্ছে করে ফিরে পেতে গাঁয়ের ছোট্ট নীড়।


০৯/০৯/২০২০ ইং


মালিকুরি--একটি বিলের নাম।
পিট্টি--পিটানো বা পেটানো (আঞ্চলিক শব্দ)।