রোদের প্লাবনে পুড়ে যাচ্ছে মাঠের ফসল
মাঠ-ঘাট-প্রান্তর ফেটে চৌচির
সমবেত হয়ে কৃষককুল স্রষ্টার উদ্দেশ্যে নৈবেদ্য দিয়ে বললেন--
হে প্রভু, অনাবৃষ্টিতে পুড়ছে ক্ষেতের ফসল
শস্য না জন্মালে ধুঁকে ধুঁকে মরবো আমরা
মরবে আমাদের ছেলে-পুলে, পরিবার-পরিজন
দৃষ্টি দাও
বৃষ্টি দাও
আমাদের বাঁচাও
পরম দয়ালু স্রষ্টা বৃষ্টিতে ভিজিয়ে দিলেন মাঠ-ঘাট
ভিজিয়ে দিলেন কৃষকের মন
ফসলের দেহ জুড়ে সবুজের সমারোহ
গাছপালা, উদ্ভিদের দেহে উচ্ছল ষোড়শী যুবতীর উন্মাদনা
খুশি হলেন উদ্বিগ্ন কৃষককুল


প্রবল বৃষ্টির তোড়ে ভেসে গেল রেললাইনের বস্তি-ঘর
ফুঁসে উঠলো নিরন্ন ভিক্ষাজীবি, আশ্রয়হীন মানুষ
স্রষ্টার আরশ কেঁপে উঠলো আবার
ওদের সানুনয় নিবেদন--
আমরা গরিব-দুখি
থাকি রেল লাইনে, বস্তিতে
আমাদের কেন কষ্ট দাও, প্রভু
ওদের খুশির জন্য আবার প্রখর রোদ


পুনরায় ক্ষেপে উঠলো কৃষক, আমজনতা
নিজের বিপদ বুঝতে পারলেন স্রষ্টা
বুঝলেন- সবাইকে একসাথে খুশি করা অসম্ভব
তাই নাকে সরিষার তেল দিয়ে
কানে তুলো গুঁজে
নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়লেন পরম দয়ালু স্রষ্টা
সেই থেকে কাজে নেমে পড়েছে জীবন্ত সব বাটপাড়
গরিব-দুখির পুচ্ছে ওরা সদলে দিয়ে যাচ্ছে আ-চাঁছা বাঁশ
এই দলে কারা নেই?
আছে উকিল, ডাক্তার, পুলিশ, ইঞ্জিনিয়ার
আছে সুবিধাভোগী লেখক ও কবি
তাবেদার বুদ্ধিজীবী, ধর্ম ব্যবসায়ী
সর্বোপরি আছে বর্ণচোরা রাজনীতিবিদ
স্রষ্টার নিদ্রাবকাশে ওরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বিশ্বময়


ওরা     "লুঠছে মধু ভাজছে খই
            চিড়া দিয়ে খাচ্ছে দই!"


০৫/০৮/২০২২ ইং