নিয়তির পরিহাস দেখে বাঁকা হাসে চাঁদ--
বর্ষার বারি বিন্দুর মতো
টুপ টুপ করে ঝরে পড়ে দুঃখ--
পিপাসা কাতর চাতকের মতো
ক্ষুধার জ্বালায় কাঁদে কত অনাহারী শিশু--
এমন একটি করুণ গল্প বলছি আমি আজ--


ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলা খাবার নিয়ে
কুকুরের সাথে দশ বছরের একটি বালককে
কাড়াকাড়ি করতে দেখে
বেদনায় নীল হয়ে যায় সমবয়সী সোনালি--
হাত ইশারায় বাড়ির ভেতরে ডেকে নেয় ছেলেটিকে,
খাবার কিনে খাওয়ার জন্য
তার জমানো কটা টাকা তুলে দেয় ওর হাতে--
অজানা আশঙ্কায় তা নিতে আপত্তি করে ছেলেটি,
সোনালির চোখে মুক্তোর মতো টলটলে অশ্রুবিন্দু
দেখে দ্বিধান্বিত মনে নিয়ে নেয় টাকাগুলো--
কিন্তু বেশি দূরে যায় না--


অলক্ষ্যে দাঁড়িয়ে দেখেছিল সোনালির মা--
কঠোর ভাষায় মেয়েকে বকাবকি করতে দেখে,
বেদনার্ত মলিন বদনে
বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ায় ছেলেটি--
"চুরি করতে এসেছিস?" বলে
বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসে সোনালির মা--
"না, টাকাটা ফেরত দিতে এসেছি,
আমি নিতে চাইনি,
ওর চোখের জল দেখে নিয়েছিলাম--"
"ন্যাকামো হচ্ছে", বলে নিয়ে নেয় টাকাটা--
ধীরে ধীরে চলে যায় ছেলেটি--


বাড়ির কুকুরের জন্য তার মাস বরাদ্দ অনেক,
কিন্তু নাবালক পথশিশুর জন্য কোন দরদ নেই--
একটা বাচ্চার মনে যে মানবতাবোধ আছে,
কু-শিক্ষিত, উচ্চবিত্ত মানুষের মনে
নেই তার ছিটেফোটাও--
কৈকেয়ীর মতো নিষ্ঠুরতা দেখে
লজ্জায় মাথা নত করে অম্বরমণি--
আর সেই থেকে নির্বাক হয়ে যায় সোনালি--


আঁধারের কোলে হেলান দিয়ে নিষ্ঠুর হাসে নিয়তি--


১০/০৪/২০২১ ইং