মনে পড়ে আজ সেদিনের কথা
বসে ছিলে আমার নায়,
নীল অম্বর ভরে ছিল সেদিন
মধুময় জোছনায়।
দখিনা সমীর বহিছে সুধীর
আকাশে ফুটিছে তারা,
মেঘমুক্ত ওই সুনীল আকাশ
আনন্দে আত্মহারা।
চারিদিকে জল করে কোলাহল
নিঝুম নিস্তব্ধ রাত,
নৌকার উপর বসিয়া দু'জনে
হাতে রাখিয়াছি হাত।
জল প্লাবনের প্রবল ধারায়
জলমগ্ন পুরো দেশ,
ধূ ধূ করে সব মাঠ প্রান্তর
নেইতো জলের শেষ।
বাড়ি-ঘর, চর ডুবে গেছে সব
ক্ষিতিজ উঁচিয়ে শির,
একলা দাঁড়ায়ে রয়েছে নিরবে
যেন বড় এক বীর।
ঘরবাড়ি হারা সকল মানুষ
সড়কে নিয়েছে ঠাঁই,
পাশাপাশি বসে গাদাগাদি করে
দেখিছে জলের ঘাই।
বিরল বসনা নিরন্ন মানুষ
বসে আছে ঠাঁই ঠাঁই,
মহাপ্লাবনের মহা কলরবে
কারো চোখে ঘুম নাই।
সারাদিন কোন কাজ নেই তাই
নৌকা চালিয়ে জোসে,
এপাড়া হইতে ওপাড়ায় যাই
তোমারি সঙ্গে বসে।
আজিকার মত সেদিনও ছিল
জোছনায় ভরা রাত,
ক্ষিতিজ শাখায় বাঁধিয়া তরনী
বসে আছি একসাথ।
আকাশে তখন পূর্ণিমার চাঁদ
ঝিলমিল করে জল,
রাতজাগা পাখি বসিয়া কোথাও
হাসিতেছে খল খল।
হাসি তামাশায় কাটিছে সময়
হঠাৎ ধরিলে গান,
মধুমাখা সেই অমিয় সুধায়
ভরিল আমার প্রাণ।
সেদিনের সেই মায়ামাখা সুর
বাজিছে এখনো কানে,
কত দূরে আছো কত দূরে থাকো
বিধাতাই শুধু জানে।
যেখানেই থাকো ভালো থেকো শুধু
চাহিনা কিছুই আর,
এ জীবনে আমি তোমাকেই ভালো
বাসিয়াছি অনিবার।
২৫/০৬/২০২০ ইং।
১৯৮৮ সালে বাংলাদেশে প্রলয়ঙ্করী বন্যার সময় আমার খুব খুব প্রিয় একজন মানুষের সঙ্গে কাটানো কিছু মুহূর্তকে ঘিরে এই লেখা। যাকে আমি সদা সর্বদাই মিস করি। খুব মিস করি। লেখার প্রয়োজনে কিছু রং মেশানো হয়েছে। তার জন্য দুঃখিত।