বাপ হেসে কয় ছেলেকে, বাপ আমার কথা শুনো
যৌতুক নিব তোমার বিয়ায়, মানবোনা মানা কোন।
তোমার লেখা-পড়ার জন্য হয়েছে ভীষণ ব্যয়,
যৌতুক নিয়ে করবো পূরণ ইহাই আমার ন্যায়।
তোমার বোনের বিয়েতে আমি দিয়েছি পণ যত,
এই সুযোগে এখন আমি করবো উসুল ততো।


বরপণ নিয়ে বিয়ে আমি করবো না বলে ছেলে,
পণ নিয়ে বিয়ে করলে এখন যেতে হবে জেলে।
তোমার বোনকে দিয়েছি আমি খাট, পালঙ্ক, টিভি,
আরো দিয়েছি অনেক সোনা, টাকার একটি ঢিবি।
বরপণ ছাড়া তোমার বিয়ে দিব না আমি জেন,
হয় যদি জেল হোক, তবু আপোস হবে না কোন।


শিক্ষার জোরে বুঝেছি আমি পণ নেয়া অপরাধ,
বোনের বিয়ের কড়চা এখন দিতে হবে সব বাদ।
ওরা নির্বোধ, নিয়েছে যৌতুক, কাজ করেছ ভুল,
জেনে-বুঝে আমি একি ভুল, করবো না একচুল।
আমার কথায় কান না দিলে হবে না এই বিয়ে,
হয়ে যাবো আমি দেশান্তরী গাট্টি বোঁচকা নিয়ে।


ছেলের এ কথায়  বাপে  তখন রেগে হয় লাল,
ত্যাজ্যপুত্র করবো তোকে তুলে নিব তোর ছাল।
বাপকে হটানো যাবে না বুঝে রাতের অন্ধকারে,
গাট্টি বোঁচকা লইয়া পোলায় চলিল দেশান্তরে।
ছেলের কান্ড দেখিয়া বাপের মাথায় পড়ে হাত,
এই যৌতুক হাতছাড়া হলে খাবে না আর ভাত!


শুভদিনের শুভক্ষণে বাপ চলিল করিতে বিয়ে,
কনের বাপের বাড়ি যখন পৌঁছিল তিনি গিয়ে--
কন্যাকে দেখে নববধু রূপে ছেলের হাত ধরে,
সাতপাকে বাঁধা পড়ছে তখন মাল্য বদল করে।
বিয়ে বাসরে বর বেশে দেখে অন্য নতুন বর,
কৌতুক প্রিয় জনগণ বলে ধর শালারে ধর!


তাড়া খেয়ে শেষে পথ নাহি পেয়ে পণ প্রার্থী বাপ,
দিশেহারা হয়ে তড়িত বেগে জলে দিয়েছে ঝাঁপ।
ছেলেরা ছুঁড়ছে নুড়ি পাথর বড়োরা ধরেছে লাঠি,
যৌতুক লোভী বাপের জীবন যাচ্ছে হতেই মাটি।
হাতজোড় করে বলে বেচারা, চাইনা আমি পণ,
এবারের তরে মাপ করে দাও ক্ষম প্রাণ ধন।


২৬/০৬/২০২০ ইং।