ছেলেটার বয়স কত আর হবে, ৫৬ থেকে ৬০ মাস
দিন রাত বউয়রে ঘ্যানর ঘ্যানর, এ  স্কুলে দিতেই হবে ছেলেটাকে
একদিন গেলাম স্কুলে , প্রিন্সিপাল ম্যাডাম আমার ইন্টা্রভু নিলেন
সহায় সম্পতির হিসাব নিকাশ দিতে হল , মনে হল দুদকের পাল্লায় আমি ধরা
ছেলেকে  এ বি সি ডি জিঞ্জেস করল না, গাড়ীর মডেল,কত ষ্কয়ার ফুটের ফ্লাট ,কোন কোন দেশে গিয়েছি জানতে চাইল ৤ বললাম সব ৤


ছেলেকে আমার দামী স্কুলে পড়াতে হবে ৤ গত ক মাসে টেনশনে স্ত্রী ঘুমায় না,
ঘুমাবেই বা কিভাবে যারা শুরু হয়েছে আসে পাশে ৤ অত্:পর ছেলেটা শেষ অবধি ইংরেজী মাধ্যমের সেরা স্কুলেই ভর্তি হয়ে গেল ৤


এখন তৃপ্তি নিয়ে স্ত্রী বলে , আমার ছেলে সেন্ট জোসেফ এ পড়ে ৤
মধ্যবিত্ত ভাবনাগুলো আমাকে তাড়ায় , যে স্কুলে পড়ে আমি আজ বিত্তবান ৬ টি ব্রেঞ্চ ছিল সেখানে আমরা পালা করে বসতাম ৤ কোন দনি ৫ /৬ ঘন্টা দাড়িয়েই কাটিযে দিতাম
বোডে লিখতে গিয়ে পন্ডিত মশাইয়ের চক ফুড়িয়ে যেত ৤ আমাদের মাঝে মাঝে কালো বোডে লেখার চকের জন্য এক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হত ৤
একটি চাপা কলে আমরা দু শ ছাত্র ছাত্রী পানি খেতাম , অনেক সময় চাপ দিলেও পানি আসত না স্কুলের কলের ৤ মধ্যবিত্ত উদ্বাস্তু এ্ই সব কথা তাড়া করে ফেরে আমায় ৤
আমার ৫৬ মাসের ছেলেটা ৪ কেজি ওজনের ব্যাগ নিয়ে স্কুলে যায়  ৤ আসলে স্কুলে ছেলে পড়ছে না, পড়ছে তার মা
স্কুলের গেটে মায়েদের আড্ডা, নানান শপিংয়ের খবরাখবর আর  একটি নিরব প্রতিযোগীতা চলে প্রতিদিন
ছেলেটা আমার সহজ সরল, ইংরেজীর সাথে পেরে উঠছে না ,
একটা অস্থির প্রতিযোগীতায় সে হাপাচেছ, পুর্নতা পাওয়ার আগে ৤
তার জানার জায়গাটা বড়ই সীমিত করে রাখা, ফ্লাটের চার বাই দশ ফুটের বারান্দায় তার জগত সীমাবদ্ব
যে সময়টায় ছিল আমাদের দুরত্বপনা,ছেলেটা  বইয়ের বোঝায় মহা বিরক্ত,সে  আই প্যাডে স্বপ্ন খুজে ৤ তার জীবনটা্ই ছকে বাধা সকাল -দুপুর -সন্ধ্যা-রাত  
তাকে অসম প্রতিযোগীতায় দৌড়াতে হবে , হচেছও
আমাদের জ্যামিতিক সমাজের ম্যার প্যাচ -সে বোঝে  না
তাতে একটা সুবিধেও আছে তার -
চেনা ভিড়ে অচেনা হয়ে বেশ চলে যায় তার সময় ৤


জুয়েল সাদত
ফ্লোরিডা, আমেরিকা ( ৩০ অক্টোবর ২০১৮ )