ফেলুদা চরিত্রে অনেক রহস্যের সমাধান করেছেন...
হাততালিও তো কম পেলেন না সারাজীবনে ,
কিন্তু মৃত্যুর ঐন্দ্রজালিক ফাঁদ কেটে বেরোতে পারলেন না কেন ফেলুদা ?
অনেক অপেক্ষা নিয়ে ছিলাম জানেন
রোজ খবরের কাগজটা আসলেই উল্টে দেখতাম ।
আপনি কেমন আছেন...
শরীরের কতটা উন্নতি হলো...!!
এই তো , গতকালকেই দেখলাম
আপনার রক্তরসের বদল করা হয়েছে ,
আপনি একটু একটু রেসপন্স করছেন ।
তবে কি ওটা ছিল মোমবাতি নেভার পূর্ব মুহূর্ত ?
আজকের পেপারটা দেখেই মনটা খারাপ হয়ে গেল
ডাক্তার বাবুরা হাল ছেড়ে দিয়েছেন ।
সৌমিত্রবাবু ,
তিনপাত্তি নিয়ে খেলতে খেলতে শেষে কিনা...
সত্যিই ডেকে নিলেন তাকে !!
একবারও ভাবলেন না কারোর কষ্ট হতে পারে !
কারোর কারোর চোখ আপনিই ঝাপসা হতে পারে !
আসলে আপনি ভাবেন নি ফেলুদা ।
আজ যে বাঙলার সব সর্বজয়ার কোল শূণ্য ,
তাদের অপু চলে গেল কোলটাকে খালি করে ।
সত্যজিৎ বাবু থেমে গেছেন...
থেমে গেছে বিভূতিবাবুর কলমটাও...
ময়ূরবাহন , গঙ্গাচরণ ,ডাঃ অশোক গুপ্ত ,
শ্যাম , অজয় , উদয়ন পণ্ডিত , চিরঞ্জীব ,
সত্য প্রতিষ্ঠাতাকারী মাষ্টারমশাই ,
নরসিংহের কালজয়ী পুরুষ...
এখন অতীত , ইতিহাস ।
কাঁদছে খোয়াই , কাঁদছে শ্রীনিকেতন ,
কাঁদছে নাট্যপ্রেমী , শিল্পীর রঙতুলিও থেমে গেছে ।
প্রেক্ষাগৃহের রিলের চলন স্তব্ধ---
অভিনয় চলতে চলতে হঠাৎ ছন্দপতন---
"কাট" শব্দটা বড্ডো অলপ্পেয়ে---
চিরদিনের জন্য কেটেই দিল হাতের আয়ুরেখাটা ।
অন্তিমযাত্রায় যাবার প্রতীক্ষা সব মানুষেরই থাকে ,
ব্যতিক্রমী হতে পারলেন না কেন সৌমিত্রবাবু ?
কেন ?কেন ?কেন ? তিনপাত্তি খেলার দেশে--
যাবার এতোই কি তাড়া ছিল !
সব চেষ্টা ধূলিস্যাৎ করে বিজয়ীর হাসিমুখ...
শুধু আকুতি মাখানো ভরাট কণ্ঠস্বরটা অনুরণিত
প্রতি ঘরে ঘরে প্রতি জনের কানে কানে চোখের জলে ।
জীবনযুদ্ধে লড়তে লড়তে বড়ো ক্লান্ত ফেলুদা...
বাঙালীর প্রাণভোমরা একরাশ ক্লান্তি নিয়ে
চিরনিদ্রায় শায়িত পরম শান্তিতে ,
চিরশান্তির দেশে...ওম শান্তি ,ওম শান্তি ,ওম শান্তি ॥